বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে দুই সাংবাদিককে আসামী করা হয়েছে চুরির মামলায়। ৭ বছর পর মামলাটি করা হয়েছে। মামলাটি হওয়ার পরথেকে সমালোচনার ঝড় বইছে পুরো জেলায়। দোকানে চুরি ও লুটপাটের ঘটনার ঘটনার ৭ বছর ২মাস পর কুড়িগ্রামে যুবলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় আসামী করা হয়েছে দুই সাংবাদিককে।
মামলায় জেলা যুবলীগের আহবায়ক রুহুল আমিন দুলালসহ ১৩জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলাটি কুড়িগ্রাম সদর থানায় রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারী। সোমবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার্ ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ। যেহেতু মামলা হয়েছে তাই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে, ওসি বলেন। মামলায় আসামি দুই সাংবাদিক হলেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন ও দৈনিক কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি ও কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক ফারুক এবং নিউজ টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশন ও দৈনিক সংবাদের জেলা প্রতিনিধি ও কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির সূর্য।
মামলার দুই সাংবাদিককে আসামী করা হলেও তাদের পরিচয় সাংবাদিক উল্লেখ করা হয়নি। সাংবাদিক আব্দুল খালেক ফারুককে যুবলীগ সদস্য এবং হুমায়ুন কবির সূর্যকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দুই সাংবাদিকের সাংগঠনিক পরিচয়ের বিষয়ে খোঁজ নিলে এর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। মামলার বাদীর নাম মাহফুজার রহমান। তিনি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নের বালাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কয়েক বছর আগে কুড়িগ্রাম শহরের জেলা পরিষদ মার্কেটে ‘চুলা ঘর’ নামে প্রতিষ্ঠান চালু করে ব্যবসা করতেন বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।
মামলায় বলা হয়েছে আসামিরা সবাই ‘আ.লীগফ্যাসিস্ট সরকারের’ দলীয় লোকজন। ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর বিকালে যুবলীগ আহ্বায়ক রুহুল আমিন দুলালের নেতৃত্বে আসামিরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে জেলা পরিষদ মার্কেটে বাদীর দোকানে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন। এসময় আসামিদের কয়েকজন তাকে মারপিট করেন। রশি দিয়ে বেঁধে পিটুনি দেন। তার পকেট থেকে এক লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেন। আসামিরা তার দোকানে থাকা গ্যাসের চুলা, সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এতে তার প্রায় ২৭ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
মাহফুজার রহমান বলেন,’ আব্দুল খালেক ফারুক ও ‘হুমায়ুন কবির সূর্য সাংবাদিক কিনা আমি জানি না। তারা সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এজন্য তাদেরকে মামলায় আসামী করেছি।’ সাংবাদিক আব্দুল খালেক ফারুক বলেন, ‘আমি সাংবাদিকতা করি। আমি কোনদিনই কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।’ সাংবাদিক হুমায়ুন কবির সূর্য বলেন,’ আমাকে হয়রানী করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
আমি মামলার বাদীকেও চিনি না।’ কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজু মোস্তাফিজ বলেন, ‘দুজনই পেশাদার সাংবাদিক। তারা কুড়িগ্রামের সুনামধন্য সাংবাদিক। শুধুমাত্র হয়রানির উদ্দেশে এই মামলা। সাংবাদিকদের এভাবে আসামি করায় পেশাদার সাংবাদিকরা আতঙ্কে রয়েছেন।