ময়মনসিংহে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আনিছের নৃশংস হামলার ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রুহুল ও তার পরিবার

- আপডেট সময় : ০৯:৩০:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১৮৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব সংবাদদাতা
* ছাত্রলীগ নেতার দায়ের কোপে মারাত্মক গুরুতর আহত হন রুহুলসহ ৩ জন
* রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে রুহুলসহ ৫ জনের নামে দেয়া হয় সাজানো মামলা
* আদালতে না যেতে হুমকি, ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শংকায় রুহুলের পরিবার
* সরকার পতনের পর থেকে আত্নগোপনে আনিছ, ইউনিয়ন বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার
সাথে সমঝোতার চেষ্টা
বিস্তারিত- ২০২৪ সালের জুন মাসে মুক্তাগাছায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা আনিছুর রহমান আনিছের নৃশংস হামলার শিকার হন রুহুল ও তার পরিবার। এসময় রুহুলসহ তার পরিবারের ৩ জনকে কুপিয়ে মারত্বক জখম করে। রুহুল উপজেলার চন্দনীআটা এলাকার মৃত কুমেদ আলীর পুত্র। জানাযায়, ২০২৪ সালের ২৩ জুন সন্ধ্যায় একই এলাকার আনসার সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুল করিম জিল্লুর পুত্র নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আনিছের নেতৃত্বে রুহুলের উপর নৃশংস হামলা চালানো হয়। নৃশংস হামলায় রহুলসহ তিনজন গুরুতর আহত হন।
এঘটনায় রুহুলের পুত্র লিমন বাদী হয়ে মুক্তাগাছা থানায় এজাহার দায়ের করলে ২৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে মামলা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হয়। মামলা নং ২৫। ধারা ১৪৩/ ৩৪১/ ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৪২৭/ ৫০৬/ ১১৪। মামলায় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুল করিম জিল্লুসহ ৫ জনকে আসামী করা হয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা ও সদরের সাবেক সাংসদ শান্ত গ্রুপের ত্রাস সৃষ্টিকারী ক্যাডার আনিছকে ২ নাম্বার আসামী করা হয়। ২৬ শে জুন মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হওয়ার পর ২৮ জুন দুপুরে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুল করিম জিল্লু বাদী হয়ে সাজানো একটি এজাহার দায়ের করেন এবং যা মামলা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হয়। মামলা নং ২৭।
মামলায় রুহুলসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করা করা হয় এবং ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়। মামলাটি রেকর্ডভুক্ত করতে মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, তৎকালীন সাংসদ কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম দলীয় ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে দাবী করেন লিমন। লিমন বলেন, আওয়ামীলীগ নেতাদের রাজনৈতিক প্রভাব ও মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে হাসপাতাল থেকে শুরু করে প্রশাসন সবাই আমাদের বিপক্ষে কাজ করছে। সাজানো মামলায় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন ও মাদকসেবী জয়নাল আবেদীন (ময়না)কে সাক্ষী করা হয়।
মামলার হওয়ার পর থেকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বিল্লাল নিজে এবং বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এবং বিল্লালের মাধ্যমে আদালতে না যেতে হুমকি প্রদান করেন ছাত্রলীগ নেতা আনিছ। ফুলবাড়িয়ায় সাবেক এমপি মালেক সরকার ও উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ এবং মুক্তাগাছায় সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং সাবেক সাংসদ কৃষিবিদ নজরুল ইসলামের মাধ্যমে জখমী সনদ উত্তোলনে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছে। সম্প্রতি রাতের আধারে আওয়ামী লীগ সভাপতি বিল্লাল হোসেন ইউনিয়ন বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতাকে নিয়ে দাওয়াত খান।
বিএনপির ঐ নেতার মাধ্যমে এখন বিএনপি থেকেও রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চেষ্টা করছে। আমরা বিচার কোথায় কার কাছে পাবো? একদিকে আদালতে গেলে আমাদের জীবিত আসতে দিবেনা বলে বিল্লালের মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। অপর দিকে টাকা দিয়ে মাদক সেবনকারী ময়নাকে দিয়ে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে সাজানো মামলায় আমাদের ফাসানোর বিচার কোথায় কার কাছে চাইবো। ইতিমধ্যে এক পুলিশ সদস্যকে মুঠোফোনে মামলার সাক্ষী ময়না জানান তাকে দিয়ে মিথ্যা বলানো হয়েছে।
ময়নার মত করে সকল জায়গায় টাকা ও রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের ন্যায় বিচার বঞ্চিত করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। এমতাবস্থায় ন্যায় বিচার পাওয়ার নিয়ে শংকায় দিন কাটছে রুহুল ও তার পরিবারের। আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সাজানো মামলা থেকে বাঁচতে এবং নৃশংস হামলার বিচার পাবে কি রুহুলের পরিবারের লোকজন? ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে প্রশাসন থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিরা রুহুলের পরিবারের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আনিছসহ জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
প্রলয়/মোমিন-তালুকদার