ঢাকা ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহ মেডিকেলে এক মাস ধরে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন সংকট : বাইরে থেকে কেনার পরামর্শ কর্তৃপক্ষের

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৫:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • / ১২৩ বার পড়া হয়েছে

ফারুক আহমেদ, নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জলাতঙ্ক ইউনিটে গেলো এক মাস ধরে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন সংকট চলছে। ফলে অর্থ খরচ করে বাইরে থেকে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। বিড়াল, কুকুর ও শিয়ালের কামড় কিংবা আঁচড় দেওয়ার কারণে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন দিতে হয় জলাতঙ্ক রোগ থেকে রক্ষা পেতে।

কিন্তু গেলো এক মাস ধরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জলাতঙ্ক ইউনিটে এই ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। জলাতঙ্ক ইউনিটের ইনচার্জ ডা. প্রজ্ঞানন্দ নাথ বলেন, ‘বিড়াল, কুকুর ও শিয়ালের কামড় কিংবা আঁচড় দেওয়ার কারণে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন দিতে হয় জলাতঙ্ক রোগ থেকে রক্ষা পেতে। তিন ডোজের এই ভ্যাকসিন নিতে প্রতিদিন জলাতঙ্ক ইউনিটে এক থেকে ১৫০ রোগী আসেন। কিন্তু এই ভ্যাকসিন গত এক মাস ধরে সরবরাহ বন্ধ থাকায় আমরা রোগীকে দিতে পারছি না।

বাইরে থেকে রোগীকে কেনার জন্য পরামর্শ দিয়ে প্রেসক্রিপশন করা হচ্ছে।’ তবে দ্রুতই এই ভ্যাকসিন সরবরাহ পাওয়া যাবে এমনটাই জানান তিনি। নগরীর এস কে হাসপাতালে জলাতঙ্ক ইউনিটে বিড়ালের কামড় খেয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য এসেছেন কলেজশিক্ষার্থী সুমাইয়া (২০)।

ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় বাইরে থেকে কেনার জন্য চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন করে দিয়েছেন। তিনি জানান, ঘরে লালন-পালন করা বিড়ালকে গোসল করানোর সময় হাতের আঙুলে কামড় দিয়েছে। জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার জন্য এস কে হাসপাতালের জলাতঙ্ক ইউনিটে এসেছিলেন ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য। কিন্তু সরবরাহ না থাকায় ভ্যাকসিন নিতে পারেননি। এখন বাইরে থেকে টাকা খরচ করে ভ্যাকসিন কিনে নিতে হবে এমনটাই জানান তিনি। শুধু সুমাইয়া না, সকাল থেকেই জলাতঙ্কে ইউনিটে অসংখ্য রোগী আসছেন অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য।

ভ্যাকসিন না পেয়ে প্রেসক্রিপশন নিয়েই তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কুকুরের কামড় খেয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য এসেছিলেন ময়মনসিংহ সদরের চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের কৃষক নিজামুদ্দিন (৪৫)। ভ্যাকসিন না পেয়ে তিনিও বাড়ি ফিরে গেছেন।

কৃষক নিজামুদ্দিন বলেন, ‘সরকারিভাবে ভ্যাকসিন পেলে আমাদের মতো গরিব কৃষকদের টাকা খরচ করতে হয় না। সরবরাহ না থাকায় হাসপাতালের জলাতঙ্ক ইউনিট থেকে ভ্যাকসিন দিতে পারে নাই। বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে বাড়ি ফিরে যেতে হবে।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মাইনউদ্দীন খান জানান, সরকারিভাবে সরবরাহ না থাকায় ভ্যাকসিন রোগীদের দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুতই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ময়মনসিংহ মেডিকেলে এক মাস ধরে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন সংকট : বাইরে থেকে কেনার পরামর্শ কর্তৃপক্ষের

আপডেট সময় : ০৩:৫৫:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

ফারুক আহমেদ, নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জলাতঙ্ক ইউনিটে গেলো এক মাস ধরে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন সংকট চলছে। ফলে অর্থ খরচ করে বাইরে থেকে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। বিড়াল, কুকুর ও শিয়ালের কামড় কিংবা আঁচড় দেওয়ার কারণে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন দিতে হয় জলাতঙ্ক রোগ থেকে রক্ষা পেতে।

কিন্তু গেলো এক মাস ধরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জলাতঙ্ক ইউনিটে এই ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। জলাতঙ্ক ইউনিটের ইনচার্জ ডা. প্রজ্ঞানন্দ নাথ বলেন, ‘বিড়াল, কুকুর ও শিয়ালের কামড় কিংবা আঁচড় দেওয়ার কারণে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন দিতে হয় জলাতঙ্ক রোগ থেকে রক্ষা পেতে। তিন ডোজের এই ভ্যাকসিন নিতে প্রতিদিন জলাতঙ্ক ইউনিটে এক থেকে ১৫০ রোগী আসেন। কিন্তু এই ভ্যাকসিন গত এক মাস ধরে সরবরাহ বন্ধ থাকায় আমরা রোগীকে দিতে পারছি না।

বাইরে থেকে রোগীকে কেনার জন্য পরামর্শ দিয়ে প্রেসক্রিপশন করা হচ্ছে।’ তবে দ্রুতই এই ভ্যাকসিন সরবরাহ পাওয়া যাবে এমনটাই জানান তিনি। নগরীর এস কে হাসপাতালে জলাতঙ্ক ইউনিটে বিড়ালের কামড় খেয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য এসেছেন কলেজশিক্ষার্থী সুমাইয়া (২০)।

ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় বাইরে থেকে কেনার জন্য চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন করে দিয়েছেন। তিনি জানান, ঘরে লালন-পালন করা বিড়ালকে গোসল করানোর সময় হাতের আঙুলে কামড় দিয়েছে। জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার জন্য এস কে হাসপাতালের জলাতঙ্ক ইউনিটে এসেছিলেন ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য। কিন্তু সরবরাহ না থাকায় ভ্যাকসিন নিতে পারেননি। এখন বাইরে থেকে টাকা খরচ করে ভ্যাকসিন কিনে নিতে হবে এমনটাই জানান তিনি। শুধু সুমাইয়া না, সকাল থেকেই জলাতঙ্কে ইউনিটে অসংখ্য রোগী আসছেন অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য।

ভ্যাকসিন না পেয়ে প্রেসক্রিপশন নিয়েই তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কুকুরের কামড় খেয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য এসেছিলেন ময়মনসিংহ সদরের চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের কৃষক নিজামুদ্দিন (৪৫)। ভ্যাকসিন না পেয়ে তিনিও বাড়ি ফিরে গেছেন।

কৃষক নিজামুদ্দিন বলেন, ‘সরকারিভাবে ভ্যাকসিন পেলে আমাদের মতো গরিব কৃষকদের টাকা খরচ করতে হয় না। সরবরাহ না থাকায় হাসপাতালের জলাতঙ্ক ইউনিট থেকে ভ্যাকসিন দিতে পারে নাই। বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে বাড়ি ফিরে যেতে হবে।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মাইনউদ্দীন খান জানান, সরকারিভাবে সরবরাহ না থাকায় ভ্যাকসিন রোগীদের দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুতই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।