শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন
জাফর আহমেদ, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় বিএনপি আমলে নির্মাণ করা আবাসন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সংস্কার না করায় দুর্বিষহ দিন কাটছে বাসিন্দাদের। ২১ বছর আগে নির্মাণ করা টিনসেট আবাসনের সবগুলো ঘরই নষ্ট হয়ে গেছে চালসহ বেড়া। বাসিন্দারা জানান, আবাসনের ১৮০টি পরিবারের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৪ সালে ফুলবাড়ী উপজেলা শহর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রখানা বালাটারি এলাকায় আশ্রয়হীন ১৮০ পরিবারের জন্য সাড়ে ৬ একর জমিতে আবাসনের ঘর তৈরি করে বিএনপি সরকার। পরে সময়ের ব্যবধানে ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও ঘরগুলো মেরামত করেনি আওয়ামীলীগ সরকার।
বাসিন্দাদের অভিযোগ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের নিকট বার বার ধরনা দিলেও ক্ষতিগ্রস্থ আবাসনের ঘর মেরামত করেনি আওয়ামীলীগ সরকার। ফলে চালসহ বেড়া নষ্ট হওয়ায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ঘরগুলো। এমন পরিস্থিতিতে আবাসনের ঘর ফেলে রেখে চলে গেছেন অনেক বাসিন্দা। নদী ভাঙনে আশ্রয়হীন পরিবারগুলো এখানে বসবাস করলেও বর্ষাকালে বৃষ্টি ও শীত থেকে বাঁচতে ভাঙা চালে পলিথিন দিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
আবাসনেরর বাসিন্দারা জানান, বার বার জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হলেও মেলেনি কোন সমাধান। বিএনপি সরকারের আবাসন হওয়ায় তা মেরামত করা হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। ২০০৪ সালে নির্মাণ করা আবাসনটিতে আশ্রয়হীন প্রতিটি পরিবারকে দেয়া হয় সাড়ে চার শতক জমিসহ ঘর।
বালাটারি আবাসনের বাসিন্দা ময়না বালা বলেন, এই আবাসনে খুব কষ্টে আছি বাবা। ঘরের চাল নষ্ট হইছে অনেক আগে। কেউ দেখতেও আসে নাই। শুনছি আবাসনটা বিএনপি করছে দেখি, হাসিনা সরকার ভালো করে দেয় নাই। বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি, আর শীতকালে শীত। পলিথিন দিয়ে জোড়াতালি দিয়েও কাজ হয় না। আমারদের যাওয়ার মতো কোন স্থান নাই, খুব কষ্ট করে এখানে পড়ে আছি। ঘরগুলা একটু ভালো করে দিলে, খাই না খাই শান্তিতে থাকা যাইতো।
আরেক বাসিন্দা রহিম মিয়া বলেন, আমরা তো দিন করে দিন খাই। ঘর মেরামত করার মতো সামর্থ্য নাই। এই সরকার যদি আবাসনের ঘরগুলা ভালো করে দিতো, সারাদিন কামলা খাঁটি আসি রাতটা অন্তত ভালো করি থাকা যাইতো।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, উপজেলার বালাটারি এলাকার আবাসনসহ একাধিক আবাসনের জরাজীর্ণতার বিষয়ে উর্ধ্বতনো কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হবে।