রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন
পাবনা সংবাদদাতা
পাবনায় সংবাদ প্রকাশ ও প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে এক জুট ব্যবসায়ীর কাছে জোরপূর্বক চাঁদা দাবি ও গ্রহণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এটিএন বাংলার সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের যৌথদল। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে রাধানগর ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম।
গ্রেফতারকৃত আসামি মোবারক বিশ্বাস পৌর এলাকার রাধানগর ঈদগাহ ময়দান মহল্লার মৃত আব্দুস বিশ্বাসের ছেলে। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা ও দৈনিক খবরপত্রের পাবনা প্রতিনিধি। এরআগে তার নামে মাদক ও প্রতারণা সহ নানা অভিযোগে পূর্বে দায়ের করা ৫টি মামলা রয়েছে।
মামলার এজাহার বলছে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাবনার দিলালপুর চারতলা মোড় এলাকার জুট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তামান্না এন্টারপ্রাইজে যান এবং প্রতিষ্ঠানের সামনে মালিক তোফাজ্জল হোসেনকে আটকে এটিএন বাংলার সাংবাদিক পরিচয়ে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তোফাজ্জল সেটি দিতে না চাইলে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে প্রাণ নাশের হুমকি দেন। ভয়ে তৎক্ষনাৎ পুরো টাকা না দিতে পারলেও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্ষমা চান তোফাজ্জল। তাতে ক্ষমা না করে উল্টো বাকি ৫০ হাজার টাকা পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে দিতে বলেন। না দিলে তোফাজ্জলের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও তার নামে ভূয়া সংবাদ প্রকাশ করার হুমকি দেন। এঘটনায় গত মঙ্গলবার পাবনা সদর থানায় একটি মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এব্যাপারে ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ব্যবসায়ীর থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এটি ছাড়াও পূর্বে নানা অভিযোগে তার নামে আরো ৫টি মামলা রয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
পাবনায় কর্মরত একাধিক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চরম উশৃঙ্খল ও বিতর্কিত হওয়ায় পাবনার মূলধারার সকল সাংবাদিকদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। আপন ভাইকে বাসা থেকে বের করে জমি দখল, বন্ধুর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে দখল, মাদক ব্যবসা এমন কিছু নেই যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিরোধিতার কারণে ৫ আগস্টে তাকে গণপিটুনি দেয় ছাত্র-জনতা। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে যোগসাজসে এসব অপকর্ম করেছিলেন তিনি। বিশেষত তিনি জেলা যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের মাদক ব্যবসার সহযোগী ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু পটপরিবর্তনে বিএনপিপন্থি পরিচয়ে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করছিলেন মোবারক। যা নিয়ে মূলধারা সাংবাদিকরা বিব্রত ছিলেন।