পটুয়াখালীতে বন উজার ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তার তদন্ত করবে কে?

- আপডেট সময় : ০৭:২১:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ১৫১ বার পড়া হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চর যমুনা সংলগ্ন মাঝের চরের সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে জমি দখলের অভিযোগ উঠে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে।
তাছাড়া রাঙ্গাবালী বণাঞ্চলের অধিনে প্রায় সময় দেখা যায় নিয়মনিতী তোয়াক্কা না করে,গাছ কাঁটা,বনে মহিষ বিচরণ,নদীতে অবৈধভাবে মাছ আহরণ,নানান প্রকার অবৈধ জালে মাছ শিকার, বনের মধু পাচার ও কৃত্তিম বাঁধ সৃষ্টি করে মাছ আহরণ থেকে শুরু করে বনজ ভূমি ব্যবহার করে তরমুজ চাষসহ ব্যাপক অনিয়ম হয়ে আসছে রাঙ্গাবালী উপজেলার চর অঞ্চলে।
যাহা নানান সময় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হলেও দেখা মিলেনি কোন আইনি হস্তক্ষেপ, শুধুমাত্র কাগজে কলমে সিমাবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে বিগত দিন গুলোতে। বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও মেলেনি কোন প্রতিকার সব সময় চুপ থাকতে দেখা গেছে কর্তা ব্যাক্তিদের।
আর সেই সুযোগে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে সব অনিয়মের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রশাসন ও গণমাধ্যমের হাত থেকে বাঁচতে বনের মূলবান গাছ কেটে আশপাশের পুকুর ও মাছের ঘেরে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে। কাটা গাছের গোড়া কখনো মাটিচাপা দেয়া হয়েছে, আবার কখনো শেকড় দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবাদ করলে ফাঁসানোর জন্য তাদের পুকুর কিংবা ঘেরে ফেলে রাখা হচ্ছে কাটা গাছের অংশ। আবার কখনো দেয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী জাকারিয়া বলেন, এই সংরক্ষিত বন আমাদের ঢাল স্বরূপ। এটি না থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবো। অথচ বিট অফিসার ও রেঞ্জ অফিসার এবং বনখেকো চক্র মিলে মিশে ধীরে ধীরে এই বাগান শেষ করে দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান,দশমিনা থেকে অমিতাভ সরকার রাঙ্গাবালী রেইন্জে আসার পর তিনি প্রায় সময় নিজ অফিসে না থেকে পটুয়াখালী জেলা অফিসে অবস্থান করেন আর তার হয়ে বিট অফিসারগণ মহিষ,খাল,কৃত্তিম বাঁধের ইজারা দিয়ে থাকেন।
কাগজে কলমে নামমাত্র ইজারা জমা হলেও মোটা অংকের টাকা দিতে হয় কোন রকম লিখিত চুক্তি ছাড়া তা না হলে মোটা অংকের টাকায় বহিরাগত দের দেয়া হয় ইজারা যার ফলে প্রতি বছর মোটা টাকা খাজনা দিয়ে আমাদের মহিষ গুরু মাঠে বিচরণ করাতে হয়।
চর যমুনার এক মাছ ব্যবসায়ী জানান,বিট অফিসার ও রেঞ্জ অফিসারের মন মতন টাকা না দিলে খালে মাছ শিকার করতে বাঁধা দেয়া থেকে মামলা পর্যন্ত খেতে হয় আমাদের। তিনি আরও বলেন অধিক সময় একই স্থানে থাকার ফলে স্থানীয় প্রভাবশালীদের চেনা জানা বেড়ে যাওয়ার ফলে আমাদের মতন সাধারণ জেলে দের বিভিন্ন স্তরকে টাকা দিতে হয় না দিলে ছেলে মেয়েদের নিয়ে থাকতে হয় খালি পেটে। মাঝে মধ্যে দু একটা বিষয়ে লোক মুখে প্রচার হয়ে তা জনসুমক্ষে আসলেও কাগজ তদবিরে থেমে যায়।
সম্প্রতি সময়ে বন উজার করে বনের ভিতর ভেকু দিয়ে ঘের কর্তণের অভিযোগ উঠে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে যা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশ পায়। এলাকাবাসীর মতে, আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় প্রথমে ঘের করেছিলেন জুয়েল সিকদার, এখন বিএনপির ছত্রছায়ায় থেকে বনের জমি দখল করে নতুন বাঁধ নির্মাণ করছেন। ঘেরের পানি নিষ্কাশনের জন্য বনের মধ্যে ভেকু মেশিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নালা ও কালভার্ট। ঘের মালিক ইসমাইল মাঝির ভাই মামুন মাঝি বলেন, ২০২০ সালে ঘের করার সময় দেড় একর বনভূমি দখল করা হয়েছিল। এ বছরও নতুন করে ৩০-৪০ ফুট বনভূমির ভেতরে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এভাবেই্ ধীরে ধীরে বন উজাড় হচ্ছে রেইঞ্জ অফিসার না জানলে কি এটা করা সম্ভব হতো? বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭০-৮০ দশকে গড়ে ওঠা এই সংরক্ষিত বনাঞ্চল উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে কাজ করে। এটি জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে, পশু-পাখির আশ্রয়স্থল এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া একই স্থানে বহুদিন কর্মরত থাকার কারণে স্থানীয় বলয় ও চেনা জানা হওয়াতে অপরাধের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলার আশংকা থাকে,তাই স্থান কাল হিসাবে নির্দিষ্ট সময়ের পর কাওকেই একই স্থানে রাখা ঠিক নয়। খোঁজনিয়ে জানা যায়,রাঙ্গাবালী রেইন্জ অফিসার অমিতাভ সরকার সব সময় বিভাগীয় কার্যালয় নানান কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন যাতে করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার স্নেহ ভাজন হয়ে সব সময় নিজেকে দোষ ত্রুটির হাত থেকে দুরে রাখতে ব্যস্ত থাকেন । এবং জেলা অফিসে নিজের আধিপত্য যাহির করতে দেখা য়ায় নিজেকেই তিনি বিভাগীয় কর্মকর্তা ভাবেন বলে অফিস পাড়ায় গুনঞ্জন চলে সাধারণ স্টাফ ও কর্মচারীদের মুখে। বিভিন্ সময়ে এ রেইন্জে ঘটে যাওয়া নানান অনয়মের বিষয়ে রাঙ্গাবালী রেইন্জ অফিসার অমিতাভ সরকারের সাথে যোগা যোগ করা হলে তিনি কোন প্রকার কথা বা দেখা করতে চাননি প্রতিবেদকের সাথে।
গত ৭ মার্চ দৈনিক দেশ রূপান্তরে শেষ পাতায় ‘সংরক্ষিত বনে বনখেকো চক্রের থাবা’শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি নজরে আসে বন বিভাগের এসময়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পটুয়াখালী সহকারী বন সংরক্ষক তারিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে এ তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বন বিভাগের রাঙ্গাবালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আমিতাভ বসু ও চরমোন্তাজ রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান। চরমন্তাজ ও রাঙ্গাবালী দুই রেইঞ্জের বাসিন্ধারা জানান, বন উজাড় করার বিষয়ে তিন সদস্যর কমিটির দুই সদস্যর নিজ কর্মস্থলে নানান অভিযোগের সাথে জড়িত অথচো তাদের করা হয়েছে এখন তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না এটা জনগন ও গনমাধ্যমকে বোকা বানানো হচ্ছে ।
আরও বিস্তারিত আসছে….