ঢাকা ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, মামলা দায়ের ইশরাককে শপথ না পড়ালে সেবা বন্ধের হুমকি ডিএসসিসি কর্মচারীদের বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার সালজার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলেন প্রধান উপদেষ্টা সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে শর্ট সার্কিট, ভালুকায় কারখানায় অগ্নিকাণ্ড সদরপুরে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মানববন্ধন গফরগাঁও এ ভূমি অধিগ্রহণ শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত সরকারের সমালোচনা করা রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার: আশফাক নিপুন

ইশরাককে শপথ না পড়ালে সেবা বন্ধের হুমকি ডিএসসিসি কর্মচারীদের

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / ৫৩ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো না হলে বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টার পর থেকে নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা। এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ইশরাকের সমর্থকরাও।

নগর ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়ন, স্ক্যাভেঞ্জারস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, পরিবহন চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন, বিদ্যুৎ কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতির নেতারা একত্র হয়ে আন্দোলনে অংশ নেন।

ডিএসসিসি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী বলেন, “বর্তমান সরকারকে বলতে চাই—মানুষকে কষ্ট দেবেন না। আমাদের দাবি মেনে নিন। সামনে কোরবানির ঈদ, কী করতে পারি সেটা কল্পনাও করতে পারবেন না। প্রয়োজনে ঢাকা অচল করে দেব।”

আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান জানান, “আমরা বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।”

গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির কারণে নগর ভবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে, সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের অস্থায়ী কার্যালয়ও নগর ভবনে অবস্থান করায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না।

মঙ্গলবার নগর ভবনের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলনকারীরা জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সমর্থকরা সেখানে যোগ দেন। ইশরাকের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিতে তারা স্লোগান দিতে থাকেন। এতে করে বঙ্গবাজার থেকে গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজার পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

নিজেকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শনিবার স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দেন ইশরাক হোসেন। সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ বা সম্পর্ক নেই।”

অন্যদিকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জানান, ইশরাকের শপথ কার্যকরে সরকার কিছু আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতার মুখে পড়েছে। তিনি বলেন, “সব ধরনের জটিলতা নিরসন না করে সিদ্ধান্তে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে প্রায় পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তবে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ওই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে। পরে ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তার মেয়র হিসেবে মনোনয়ন নিশ্চিত করে। কিন্তু এখনও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে গত বুধবার থেকে ইশরাকের সমর্থকরা ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছেন। শনিবার সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শেষে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ই-পেপার

ইশরাককে শপথ না পড়ালে সেবা বন্ধের হুমকি ডিএসসিসি কর্মচারীদের

আপডেট সময় : ০৯:৫৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো না হলে বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টার পর থেকে নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা। এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ইশরাকের সমর্থকরাও।

নগর ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়ন, স্ক্যাভেঞ্জারস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, পরিবহন চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন, বিদ্যুৎ কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতির নেতারা একত্র হয়ে আন্দোলনে অংশ নেন।

ডিএসসিসি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী বলেন, “বর্তমান সরকারকে বলতে চাই—মানুষকে কষ্ট দেবেন না। আমাদের দাবি মেনে নিন। সামনে কোরবানির ঈদ, কী করতে পারি সেটা কল্পনাও করতে পারবেন না। প্রয়োজনে ঢাকা অচল করে দেব।”

আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান জানান, “আমরা বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।”

গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির কারণে নগর ভবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে, সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের অস্থায়ী কার্যালয়ও নগর ভবনে অবস্থান করায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না।

মঙ্গলবার নগর ভবনের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলনকারীরা জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সমর্থকরা সেখানে যোগ দেন। ইশরাকের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিতে তারা স্লোগান দিতে থাকেন। এতে করে বঙ্গবাজার থেকে গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজার পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

নিজেকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শনিবার স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দেন ইশরাক হোসেন। সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ বা সম্পর্ক নেই।”

অন্যদিকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জানান, ইশরাকের শপথ কার্যকরে সরকার কিছু আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতার মুখে পড়েছে। তিনি বলেন, “সব ধরনের জটিলতা নিরসন না করে সিদ্ধান্তে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে প্রায় পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তবে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ওই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে। পরে ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তার মেয়র হিসেবে মনোনয়ন নিশ্চিত করে। কিন্তু এখনও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে গত বুধবার থেকে ইশরাকের সমর্থকরা ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছেন। শনিবার সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শেষে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন তারা।