ঢাকা ০৩:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সম্পদের পাহাড় সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমির নায়েব কামালের

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২৩:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১০১ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব কামাল হোসেনের বিলাস বহুল বাড়ি

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব কামাল হোসেন। অনিয়ম দুর্নীতি করে বিগত ১৫ বছরে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক এমপি শামীম ওসমানের কল্যাণে নারায়ণগঞ্জ নায়েব কমিটির সভাপতির পদ বাগিয়ে নিয়ে তিনি হয়ে যান ভূমির মাফিয়া। ঘুরে ফিরে ৩২ বছর ধরে কাজ করছেন একই জেলার বিভিন্ন ভূমি অফিসে। প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন করতে এমপি শামীম ওসমানকে দশটি গরু উপর দিয়ে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে গেছেন নিশ্চিন্তে। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও গুণধর এ ভূমি কর্মকতা রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

জানা গেছে, কামাল হোসেনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একরামপুর গ্রামে। অর্থিক অনটনের সংসারে সরকারি চাকরি নামক সোনার হরিণ পেয়ে যান ১৯৯০ সালে। মাত্র বারোশত টাকা বেতন স্কেলে তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী হিসেবে ভূমি অফিসে চাকরি জীবন শুরু করেন। তার পর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী থেকে পদোন্নতি পেয়ে নায়েব হয়েই কোটি কোটি টাকার মালিক হন কামাল হোসেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার নিজ গ্রাম একরামপুরে কামাল গড়ে তুলেছেন বিচলাসবহুল সাত তলা ভবন, যার পাশেই দশ কাঠা জমিতে নান্দনিক বাগানবাড়ি, আমিন আবাসিক এলাকার বিএসএস শাহ রোডে ১০ কাঠা জমিতে ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে একটি ভবনের কাজ চলমান, ঢাকার টিকাটুলি ১০ অভয় দাশ লেন রোডেন সুফিয়ানী প্লাজায় ফ্ল্যাট। এছাড়াও তার নামে বেনামে রয়েছে বহু সম্পদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স। তিনি চলাফেরা করেন অর্ধ কোটি টাকা দামের গাড়ি দিয়ে। দত্ত্বক নেওয়া একমাত্র মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন তুরস্কে।

অভিযোগ উঠেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবদের নিয়ে গঠিত নায়েব কমিটির সভাপতি হওয়ার পর থেকেই কামাল জড়িয়ে পড়েন অনিয়ম দুর্নীতিতে। তার ঘুষ বাণিজ্য বহাল রাখতে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সাথে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠলেও শামীম ওসমানের আশির্বাদে ধামাচাপা পড়ে যেত। শামীম ওসমানের আশির্বাদ পেতে কামাল প্রতিবছর বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে শামীম ওসমানকে ১০ টি গরু উপহার দিতেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভূমি কর্মকর্তা জানান, কামালের অবৈধ আয়ের উৎস ভূমি উন্নয়ন কর, দাখিলা, নামজারি, জাল পর্চা ও ভূমি সেবা গ্রহিতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ আদায়। একাধিক ভূক্তভোগী জানায়, ঘুষ ছাড়া কমাল কোনো ফাইলেই সই করেন না। তার চাহিদা মতে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। জমির নামপত্তন, হাল নাগাদ, খাজনা দাখিলা কর্তন, নামজারি ভুলভ্রান্তি সংশোধন, ভিপি সম্পত্তি, দেওয়ানি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও এলএসডি মামলাসহ বিভিন্ন কাজে ঘুষ নেন তিনি। তার এসব বাণিজ্য চালিয়ে যেতে তিনি যখন যে অফিসে যোগদান করেছেন সে অফিসেই গড়ে তুলেছেন দালাল চক্র।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নায়েব কামাল হোসেন কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।

 

এসএম/

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সম্পদের পাহাড় সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমির নায়েব কামালের

আপডেট সময় : ০৫:২৩:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব কামাল হোসেন। অনিয়ম দুর্নীতি করে বিগত ১৫ বছরে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক এমপি শামীম ওসমানের কল্যাণে নারায়ণগঞ্জ নায়েব কমিটির সভাপতির পদ বাগিয়ে নিয়ে তিনি হয়ে যান ভূমির মাফিয়া। ঘুরে ফিরে ৩২ বছর ধরে কাজ করছেন একই জেলার বিভিন্ন ভূমি অফিসে। প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন করতে এমপি শামীম ওসমানকে দশটি গরু উপর দিয়ে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে গেছেন নিশ্চিন্তে। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও গুণধর এ ভূমি কর্মকতা রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

জানা গেছে, কামাল হোসেনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একরামপুর গ্রামে। অর্থিক অনটনের সংসারে সরকারি চাকরি নামক সোনার হরিণ পেয়ে যান ১৯৯০ সালে। মাত্র বারোশত টাকা বেতন স্কেলে তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী হিসেবে ভূমি অফিসে চাকরি জীবন শুরু করেন। তার পর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী থেকে পদোন্নতি পেয়ে নায়েব হয়েই কোটি কোটি টাকার মালিক হন কামাল হোসেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার নিজ গ্রাম একরামপুরে কামাল গড়ে তুলেছেন বিচলাসবহুল সাত তলা ভবন, যার পাশেই দশ কাঠা জমিতে নান্দনিক বাগানবাড়ি, আমিন আবাসিক এলাকার বিএসএস শাহ রোডে ১০ কাঠা জমিতে ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে একটি ভবনের কাজ চলমান, ঢাকার টিকাটুলি ১০ অভয় দাশ লেন রোডেন সুফিয়ানী প্লাজায় ফ্ল্যাট। এছাড়াও তার নামে বেনামে রয়েছে বহু সম্পদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স। তিনি চলাফেরা করেন অর্ধ কোটি টাকা দামের গাড়ি দিয়ে। দত্ত্বক নেওয়া একমাত্র মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন তুরস্কে।

অভিযোগ উঠেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবদের নিয়ে গঠিত নায়েব কমিটির সভাপতি হওয়ার পর থেকেই কামাল জড়িয়ে পড়েন অনিয়ম দুর্নীতিতে। তার ঘুষ বাণিজ্য বহাল রাখতে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সাথে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠলেও শামীম ওসমানের আশির্বাদে ধামাচাপা পড়ে যেত। শামীম ওসমানের আশির্বাদ পেতে কামাল প্রতিবছর বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে শামীম ওসমানকে ১০ টি গরু উপহার দিতেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভূমি কর্মকর্তা জানান, কামালের অবৈধ আয়ের উৎস ভূমি উন্নয়ন কর, দাখিলা, নামজারি, জাল পর্চা ও ভূমি সেবা গ্রহিতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ আদায়। একাধিক ভূক্তভোগী জানায়, ঘুষ ছাড়া কমাল কোনো ফাইলেই সই করেন না। তার চাহিদা মতে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। জমির নামপত্তন, হাল নাগাদ, খাজনা দাখিলা কর্তন, নামজারি ভুলভ্রান্তি সংশোধন, ভিপি সম্পত্তি, দেওয়ানি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও এলএসডি মামলাসহ বিভিন্ন কাজে ঘুষ নেন তিনি। তার এসব বাণিজ্য চালিয়ে যেতে তিনি যখন যে অফিসে যোগদান করেছেন সে অফিসেই গড়ে তুলেছেন দালাল চক্র।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নায়েব কামাল হোসেন কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।

 

এসএম/