ঢাকা ১২:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কুড়িগ্রাম জেলা উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন পরিষদ কমিটি গঠিত এজাহারভুক্ত সব পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নোটিশ বন্যায় ডুবে গেছে সবজি ক্ষেত, বিপাকে কৃষক দূর্গাপুরে বন্যার পানিতে ডুবলো কৃষকের স্বপ্নের পান বরজ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে মিয়ানমারের নাগরিকসহ আটক ২ নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ২৭৬৩৭ জন নিয়োগ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেই আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এখন সিলেটের জেলা প্রশাসক চিকিৎসকদের দোষারোপ করে লাভ নেই, সচেতন হতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ: ইসি সচিব ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক

দোকান ঘর হারিয়ে পথে বসেছে দোকানীরা, দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না সুষ্ঠ সমাধান

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২৮:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁ প্রতিনিধি

গত ৫আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনকে কেন্দ্র করে নওগাঁর রাণীনগরে প্রায় ত্রিশবছর পর দোকান ঘর দখলে নিয়েছে এক প্রভাবশালী। এতে করে আয়ের একমাত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে সুষ্ঠ বিচারের আশায় পথে পথে ঘুরছেন দোকানীরা।

সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে ভুক্তভোগীদের আদালতের আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন।

সূত্রে জানা গেছে উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে রাণীনগর-আবাদপুকুর সড়ক সংলগ্ন শাহী সিনেমা হলের পাশ দিয়ে নির্মাণ করা সাত্তার শাহের দোকান ঘর ৯হাজার টাকার বিনিময়ে পজিশন ক্রয় করে ১৯৯১সাল থেকে ব্যবসা করে আসছিলেন উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে লোকমান হোসেন। একই গ্রামের মৃত-মফিজ সরদারের ছেলে আব্দুল আজিজ ও রফিকুল ইসলাম ২২হাজার টাকা দিয়ে দোকান ঘরের পজিশন ক্রয় করে ১৯৯১সাল থেকে হোটেল ব্যবসা করে আসছেন।

উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের মৃত-আবুল হোসেন মন্ডলের ছেলে সাগর হোসেন ১৯৯০ সালে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে দোকান ঘরের পজিশন ক্রয় করে হোটেল ব্যবসা এবং একই গ্রামের মৃত-কাশেম আলীর ছেলে আবু বক্কর ১৯৯৯ সাল থেকে ২৮ হাজার টাকা দিয়ে দোকান ঘরের পজিশন ক্রয় করে ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত ০৫আগস্ট সরকার পতনের পর ওই মার্কেটের মালিক সাত্তার শাহ দোকান ঘরগুলোর তালা ভেঙ্গে সকল মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে দোকান ঘর নিয়ে নানা নাটকীয়তা চলছে।

দোকান ঘর হারিয়ে পথে বসেছে দোকানীরা, দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না সুষ্ঠ সমাধান

বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনও সমাধান করতে না পারায় ভুক্তভোগী দোকানীদের আদালতের আশ্রয় নিতে পরামর্শ প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী লোকমান হোসেন জানান, দোকান ঘর নেওয়ার পর থেকে মালিক সাত্তার শাহ বহুবার ভাড়া বাড়িয়েছেন। কতবার অন্যায় ভাবে তালা লাগিয়েছেন তার কোন ইয়াত্তা নেই। তবুও আমরা ব্যবসা করে আসছিলাম। কিন্তু গত ৫আগস্টের পর কোন নোটিশ ছাড়াই সাত্তার শাহ বিএনপি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে জোরপূর্বক দোকান ঘরের তালা ভেঙ্গে মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং আমাদের দোকান ঘরে যেতে বাধা দেয়। এরপর থেকে অনেকবার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করার চেস্টা করা হলেও সাত্তার শাহ তার দোকান ঘরগুলো আর আমাদের দিবেন না বলে জানান।

বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধানের লক্ষ্যে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে এসিল্যান্ড স্যারও বিষয়টি সমাধান করার চেস্টা করলেও সাত্তার শাহের পেশীজোরের কাছে কেউ পাত্তা পাচ্ছেন না। দোকান ঘরগুলো হারিয়ে আজ আমরা পথে বসেছি।

আরেক ভুক্তভোগী হোটেল ব্যবসায়ী সাগর হোসেন বলেন অধিক ভাড়া পাওয়ার আশায় সাত্তার শাহ জোরপূর্বক দোকানগুলো আমাদের কাছ থেকে দখলে নিয়ে অন্যদের কাছে সিকিউরিটি নিয়ে বেশি মূল্যে ভাড়া দিবেন বলে পায়তারা করছেন। তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তরা কোথায় যাবো? আমরাও যদি এখন দোকানগুলো পেশীশক্তি দিয়ে দখলে নিই তাহলে সেখানে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হবে। যদি সাত্তার শাহ প্রশাসনের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে না আসেন তাহলে আমরা ভুক্তভোগীরাও আন্দোলনের জন্য পথে নামতে বাধ্য হবো।

মার্কেটের মালিক সাত্তার শাহ দৈনিক প্রলয়কে বলেন, আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ওই দোকানীদের নানা রকমের অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতে পারিনি। দোকানে বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার ছবি ঝুলিয়ে তারা ভাড়া না দিয়ে এতোদিন দখল করে এসেছে। তারা তাদের ইচ্ছে মাফিক ভাড়া দিতো। কোন নিয়মই তারা মানতো না। তাই সুযোগ বুঝে আমি আমার দোকানগুলোর দখল বুঝে নিয়েছি। যদি আদালত আমাকে বলে ওই দোকানীদের ঘর ফেরত দিতে তবেই আমি তাদেরকে দোকান বুঝে দিবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, বিষয়টি আমরা বার বার সমাধান করার চেস্টা করছি কিন্তু মালিক কোন সমাধানে আসতে চায় না। তাই বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে সমাধান করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে আমি মনে করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

দোকান ঘর হারিয়ে পথে বসেছে দোকানীরা, দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না সুষ্ঠ সমাধান

আপডেট সময় : ০১:২৮:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নওগাঁ প্রতিনিধি

গত ৫আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনকে কেন্দ্র করে নওগাঁর রাণীনগরে প্রায় ত্রিশবছর পর দোকান ঘর দখলে নিয়েছে এক প্রভাবশালী। এতে করে আয়ের একমাত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে সুষ্ঠ বিচারের আশায় পথে পথে ঘুরছেন দোকানীরা।

সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে ভুক্তভোগীদের আদালতের আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন।

সূত্রে জানা গেছে উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে রাণীনগর-আবাদপুকুর সড়ক সংলগ্ন শাহী সিনেমা হলের পাশ দিয়ে নির্মাণ করা সাত্তার শাহের দোকান ঘর ৯হাজার টাকার বিনিময়ে পজিশন ক্রয় করে ১৯৯১সাল থেকে ব্যবসা করে আসছিলেন উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে লোকমান হোসেন। একই গ্রামের মৃত-মফিজ সরদারের ছেলে আব্দুল আজিজ ও রফিকুল ইসলাম ২২হাজার টাকা দিয়ে দোকান ঘরের পজিশন ক্রয় করে ১৯৯১সাল থেকে হোটেল ব্যবসা করে আসছেন।

উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের মৃত-আবুল হোসেন মন্ডলের ছেলে সাগর হোসেন ১৯৯০ সালে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে দোকান ঘরের পজিশন ক্রয় করে হোটেল ব্যবসা এবং একই গ্রামের মৃত-কাশেম আলীর ছেলে আবু বক্কর ১৯৯৯ সাল থেকে ২৮ হাজার টাকা দিয়ে দোকান ঘরের পজিশন ক্রয় করে ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত ০৫আগস্ট সরকার পতনের পর ওই মার্কেটের মালিক সাত্তার শাহ দোকান ঘরগুলোর তালা ভেঙ্গে সকল মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে দোকান ঘর নিয়ে নানা নাটকীয়তা চলছে।

দোকান ঘর হারিয়ে পথে বসেছে দোকানীরা, দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না সুষ্ঠ সমাধান

বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনও সমাধান করতে না পারায় ভুক্তভোগী দোকানীদের আদালতের আশ্রয় নিতে পরামর্শ প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী লোকমান হোসেন জানান, দোকান ঘর নেওয়ার পর থেকে মালিক সাত্তার শাহ বহুবার ভাড়া বাড়িয়েছেন। কতবার অন্যায় ভাবে তালা লাগিয়েছেন তার কোন ইয়াত্তা নেই। তবুও আমরা ব্যবসা করে আসছিলাম। কিন্তু গত ৫আগস্টের পর কোন নোটিশ ছাড়াই সাত্তার শাহ বিএনপি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে জোরপূর্বক দোকান ঘরের তালা ভেঙ্গে মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং আমাদের দোকান ঘরে যেতে বাধা দেয়। এরপর থেকে অনেকবার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করার চেস্টা করা হলেও সাত্তার শাহ তার দোকান ঘরগুলো আর আমাদের দিবেন না বলে জানান।

বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধানের লক্ষ্যে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে এসিল্যান্ড স্যারও বিষয়টি সমাধান করার চেস্টা করলেও সাত্তার শাহের পেশীজোরের কাছে কেউ পাত্তা পাচ্ছেন না। দোকান ঘরগুলো হারিয়ে আজ আমরা পথে বসেছি।

আরেক ভুক্তভোগী হোটেল ব্যবসায়ী সাগর হোসেন বলেন অধিক ভাড়া পাওয়ার আশায় সাত্তার শাহ জোরপূর্বক দোকানগুলো আমাদের কাছ থেকে দখলে নিয়ে অন্যদের কাছে সিকিউরিটি নিয়ে বেশি মূল্যে ভাড়া দিবেন বলে পায়তারা করছেন। তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তরা কোথায় যাবো? আমরাও যদি এখন দোকানগুলো পেশীশক্তি দিয়ে দখলে নিই তাহলে সেখানে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হবে। যদি সাত্তার শাহ প্রশাসনের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে না আসেন তাহলে আমরা ভুক্তভোগীরাও আন্দোলনের জন্য পথে নামতে বাধ্য হবো।

মার্কেটের মালিক সাত্তার শাহ দৈনিক প্রলয়কে বলেন, আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ওই দোকানীদের নানা রকমের অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতে পারিনি। দোকানে বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার ছবি ঝুলিয়ে তারা ভাড়া না দিয়ে এতোদিন দখল করে এসেছে। তারা তাদের ইচ্ছে মাফিক ভাড়া দিতো। কোন নিয়মই তারা মানতো না। তাই সুযোগ বুঝে আমি আমার দোকানগুলোর দখল বুঝে নিয়েছি। যদি আদালত আমাকে বলে ওই দোকানীদের ঘর ফেরত দিতে তবেই আমি তাদেরকে দোকান বুঝে দিবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, বিষয়টি আমরা বার বার সমাধান করার চেস্টা করছি কিন্তু মালিক কোন সমাধানে আসতে চায় না। তাই বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে সমাধান করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে আমি মনে করছি।