ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মিঠাপুকুরে ঘাঘট নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৬৬ বার পড়া হয়েছে

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

রংপুরের মিঠাপুকুরে ঘাঘট নদে ৮টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। একটি প্রভাবশালী চক্র দৈর্ঘদিন থেকে বালু উত্তোলন করলেও রহস্যজনক কারনে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছেন।

 

এছাড়াও ওই নদীর অপর একটি পয়েন্টে স্কেবেটর দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে নদী পাড়ের বালু। ফলে নদী পাড়ের ফসলী জমিগুলোতে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়েনের ঘাঘট নদীর সংলগ্ন ইসলামপুর মজিদের ঘাটে ৮টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

 

নদীর পূর্বপাড়ে প্রায় দীর্ঘ ১ মাসের ও বেশি সময় ধরে বালু উত্তোলন করছেন একটি প্রভাবশালী চক্র। চক্রটি স্থানীয় বাসিন্দাদের ম্যানেজ করে নদী কেটে বালু উত্তোলন করলেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না কেউ। প্রভাবশালীদের মধ্যে রয়েছে মিলন মিয়া, লেবু মিয়া, রুস্তম আলী ও লাভলু মিয়া। তারা জানান ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য বালু উত্তোলন করছেন বলে দাবি করেছেন।

 

ইসলামপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, দিনেরাতে বালু উত্তোলন করলেও আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছি না এলাকার কিছু লোক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের বালু উত্তোলনের সুযোগ করে দিয়েছে। অপরদিকে ওই ইউনিয়নের ইমাদপুর আদর্শপাড়া মাঝিপাড়া এলাকায় স্কেবেটর দিয়ে নদীর পাড় কেটে নিয়ে যাচ্ছেন বৈরাতীহাটের এলাকার প্রভাবশালী বালু খেকো শফিকুল ইসলাম ভাংড়গী নামে পরিচিত এক ব্যাক্তি। তিনি প্রায় ১ মাসের ও অধিক সময় ধরে নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি করছেন।

 

স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র রয়েছে তার সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করলেও আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছিনা। শফিকুল ইসলাম ভাংড়ী বেশ প্রভাবশালী ও কয়কজন স্থানীয়কে ম্যানেজ করে তিনি দিনে শতাধিক ট্রাক্টর বালু উত্তোলন করছেন। স্থানীয় ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী হতে বালু উত্তোলন করে গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টরে করে বালু বিক্রি করছে চক্রটি। প্রতি ট্রাক্টর ১ হাজার ৬শ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। স্তুপ আকারে রয়েছে প্রায় কোটি টাকার বালু।

 

এছাড়াও, স্থানীয়ভাবে একটি রাস্তার সংস্কারের জন্য কয়েক হাজার ট্রাক্টর বালু সরবরাহ করছেন শফিকুল ইসলাম ভাংড়ী। এজন্য তিনি নদীর পাড় কেটে বালু দিচ্ছেন ওই রাস্তায়। বালু উত্তোলনকারী শফিকুল ইসলাম ভাংড়ী বলেন, নদীর পাড়ের জমির মালিকেরা আমার কাছে ট্রাক্টর প্রতি বালু বিক্রি করছেন। সেগুলো স্কেবেটরের মাধ্যমে কেটে রাস্তায় সরবরাহ করছি।

 

ইসলামপুর মজিদের ঘাটে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনকারী মিলন মিয়া, লেবু মিয়া, রুস্তম আলী ও লাভলু মিয়া জানান, স্থানীয়ভাবে কিছু মানুষ নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য বালু উত্তোলন করার অনুমতি দিয়েছেন। একারণে আমরা বালু উত্তোলন করছি।

 

মির্জাপুর ইউনিয়নের পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ইসলামপুর মজিদের ঘাট ও ইমাদপুর আদর্শপাড়া মাঝিপাড়ের কয়েকজন নদের বালু উত্তোলন করছে। তবে, কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

 

উপজেলা নির্বাহি অফিসার বিকাশ চন্দ্র বলেন, দু’একদিন আগে নদের বালু উত্তোলনের খবর পেয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

মিঠাপুকুরে ঘাঘট নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

আপডেট সময় : ১২:৪৮:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

রংপুরের মিঠাপুকুরে ঘাঘট নদে ৮টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। একটি প্রভাবশালী চক্র দৈর্ঘদিন থেকে বালু উত্তোলন করলেও রহস্যজনক কারনে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছেন।

 

এছাড়াও ওই নদীর অপর একটি পয়েন্টে স্কেবেটর দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে নদী পাড়ের বালু। ফলে নদী পাড়ের ফসলী জমিগুলোতে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়েনের ঘাঘট নদীর সংলগ্ন ইসলামপুর মজিদের ঘাটে ৮টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

 

নদীর পূর্বপাড়ে প্রায় দীর্ঘ ১ মাসের ও বেশি সময় ধরে বালু উত্তোলন করছেন একটি প্রভাবশালী চক্র। চক্রটি স্থানীয় বাসিন্দাদের ম্যানেজ করে নদী কেটে বালু উত্তোলন করলেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না কেউ। প্রভাবশালীদের মধ্যে রয়েছে মিলন মিয়া, লেবু মিয়া, রুস্তম আলী ও লাভলু মিয়া। তারা জানান ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য বালু উত্তোলন করছেন বলে দাবি করেছেন।

 

ইসলামপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, দিনেরাতে বালু উত্তোলন করলেও আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছি না এলাকার কিছু লোক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের বালু উত্তোলনের সুযোগ করে দিয়েছে। অপরদিকে ওই ইউনিয়নের ইমাদপুর আদর্শপাড়া মাঝিপাড়া এলাকায় স্কেবেটর দিয়ে নদীর পাড় কেটে নিয়ে যাচ্ছেন বৈরাতীহাটের এলাকার প্রভাবশালী বালু খেকো শফিকুল ইসলাম ভাংড়গী নামে পরিচিত এক ব্যাক্তি। তিনি প্রায় ১ মাসের ও অধিক সময় ধরে নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি করছেন।

 

স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র রয়েছে তার সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করলেও আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছিনা। শফিকুল ইসলাম ভাংড়ী বেশ প্রভাবশালী ও কয়কজন স্থানীয়কে ম্যানেজ করে তিনি দিনে শতাধিক ট্রাক্টর বালু উত্তোলন করছেন। স্থানীয় ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী হতে বালু উত্তোলন করে গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টরে করে বালু বিক্রি করছে চক্রটি। প্রতি ট্রাক্টর ১ হাজার ৬শ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। স্তুপ আকারে রয়েছে প্রায় কোটি টাকার বালু।

 

এছাড়াও, স্থানীয়ভাবে একটি রাস্তার সংস্কারের জন্য কয়েক হাজার ট্রাক্টর বালু সরবরাহ করছেন শফিকুল ইসলাম ভাংড়ী। এজন্য তিনি নদীর পাড় কেটে বালু দিচ্ছেন ওই রাস্তায়। বালু উত্তোলনকারী শফিকুল ইসলাম ভাংড়ী বলেন, নদীর পাড়ের জমির মালিকেরা আমার কাছে ট্রাক্টর প্রতি বালু বিক্রি করছেন। সেগুলো স্কেবেটরের মাধ্যমে কেটে রাস্তায় সরবরাহ করছি।

 

ইসলামপুর মজিদের ঘাটে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনকারী মিলন মিয়া, লেবু মিয়া, রুস্তম আলী ও লাভলু মিয়া জানান, স্থানীয়ভাবে কিছু মানুষ নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য বালু উত্তোলন করার অনুমতি দিয়েছেন। একারণে আমরা বালু উত্তোলন করছি।

 

মির্জাপুর ইউনিয়নের পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ইসলামপুর মজিদের ঘাট ও ইমাদপুর আদর্শপাড়া মাঝিপাড়ের কয়েকজন নদের বালু উত্তোলন করছে। তবে, কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

 

উপজেলা নির্বাহি অফিসার বিকাশ চন্দ্র বলেন, দু’একদিন আগে নদের বালু উত্তোলনের খবর পেয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হবে।