ঢাকা ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মদনে আত্মগোপনে পাঁচ ইউপি চেয়ারম্যান নাগরিক সেবা বঞ্চিত

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৯:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

হাবিবুর রহমান, মদন প্রতিনিধি

সারাদেশে ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনের মুখে (৫ আগস্ট) স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর আত্মগোপনে চলে যান নেত্রকোনার মদন উপজেলার ৫ ইউপি চেয়ারম্যান।

কার্যালয় ছাড়ার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের অনেকেই এখনও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ফেরেননি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সেবা প্রার্থীরা। পাঁচ চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে এখন রয়েছে শূন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদন উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে কাইটাইল, মদন, নায়েকপুর, মাঘান, গোবিন্দশ্রী এই ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী।

তবে, নায়েকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাসপেন্ডে থাকায় গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তার দায়িত্ব পালন করছেন ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ হাদিস মিয়া। সেও এখন পলাতক রয়েছে।

চেয়ারম্যানগন আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই গা-ঢাকা দিয়েছে ৫ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া ৫টি ইউনিয়নেরই অনেক ইউপি সদস্যও রয়েছেন আত্মগোপনে। সেইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে অনেকের মোবাইল ফোন।

জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছেন চরম বিপাকে।

এসব ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সেবা প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায় তারা দুর্ভোগে পড়েছেন। চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলে বেশিরভাগ সেবা তৎক্ষণাৎ পাওয়া যেত। চেয়্যারম্যান অনুপস্থিত থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি যেখানে বলছেন সেখানে যেতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি যেমন বেড়েছে, সেইসঙ্গে খরচ হচ্ছে বাড়তি অর্থ ও সময়।

উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাশঁরী গ্রামের বাসিন্দা রহমত মিয়া জানান, মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য ইউপি কার্যালয়ে যান তিনি। পরিষদ থেকে অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর প্রয়োজন চেয়ারম্যান কার্যালয়ে না থাকায় তার স্বাক্ষর নেওয়া সম্ভব হয়নি। জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোরদাবি জানান তিনি।

অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করলে তাদের মোবাইলের সংযোগ বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাঘান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মাসুদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়ে মদন পৌর সদরে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে বসেই করছেন চেয়ারম্যানী। এতে ওই ইউনিয়নের নাগরিকদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ও আত্মগোপনে রয়েছেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান শূন্য অবস্থাতেই চলছে এই ইউপি কার্যালয় ।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, পাঁচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি সচিবগণ চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিত দেখিয়ে আমার কাছে তথ্য প্রেরণ করেছে। এবং উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা ও আইন শৃঙ্খলা সভার উপস্থিতির আলোকে তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে। সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

নিউজটি শেয়ার করুন

মদনে আত্মগোপনে পাঁচ ইউপি চেয়ারম্যান নাগরিক সেবা বঞ্চিত

আপডেট সময় : ০৫:৫৯:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

হাবিবুর রহমান, মদন প্রতিনিধি

সারাদেশে ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনের মুখে (৫ আগস্ট) স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর আত্মগোপনে চলে যান নেত্রকোনার মদন উপজেলার ৫ ইউপি চেয়ারম্যান।

কার্যালয় ছাড়ার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের অনেকেই এখনও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ফেরেননি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সেবা প্রার্থীরা। পাঁচ চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে এখন রয়েছে শূন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদন উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে কাইটাইল, মদন, নায়েকপুর, মাঘান, গোবিন্দশ্রী এই ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী।

তবে, নায়েকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাসপেন্ডে থাকায় গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তার দায়িত্ব পালন করছেন ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ হাদিস মিয়া। সেও এখন পলাতক রয়েছে।

চেয়ারম্যানগন আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই গা-ঢাকা দিয়েছে ৫ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া ৫টি ইউনিয়নেরই অনেক ইউপি সদস্যও রয়েছেন আত্মগোপনে। সেইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে অনেকের মোবাইল ফোন।

জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছেন চরম বিপাকে।

এসব ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সেবা প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায় তারা দুর্ভোগে পড়েছেন। চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলে বেশিরভাগ সেবা তৎক্ষণাৎ পাওয়া যেত। চেয়্যারম্যান অনুপস্থিত থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি যেখানে বলছেন সেখানে যেতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি যেমন বেড়েছে, সেইসঙ্গে খরচ হচ্ছে বাড়তি অর্থ ও সময়।

উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাশঁরী গ্রামের বাসিন্দা রহমত মিয়া জানান, মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য ইউপি কার্যালয়ে যান তিনি। পরিষদ থেকে অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর প্রয়োজন চেয়ারম্যান কার্যালয়ে না থাকায় তার স্বাক্ষর নেওয়া সম্ভব হয়নি। জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোরদাবি জানান তিনি।

অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করলে তাদের মোবাইলের সংযোগ বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাঘান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মাসুদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়ে মদন পৌর সদরে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে বসেই করছেন চেয়ারম্যানী। এতে ওই ইউনিয়নের নাগরিকদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ও আত্মগোপনে রয়েছেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান শূন্য অবস্থাতেই চলছে এই ইউপি কার্যালয় ।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, পাঁচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি সচিবগণ চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিত দেখিয়ে আমার কাছে তথ্য প্রেরণ করেছে। এবং উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা ও আইন শৃঙ্খলা সভার উপস্থিতির আলোকে তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে। সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে