ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

গোপন তদন্তের মুখে আ.লীগ আমলের পুলিশ কর্মকর্তারা

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৫৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গোপন তদন্তের মুখে পড়েছেন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যরা। এরই মধ্যে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকটি ব্যাচের গোপন তদন্ত শুরু হয়েছে। নন-ক্যাডার পুলিশ সদস্যদের বিষয়েও চলছে একাধিক গোপন তদন্ত। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এই তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

ছয়টি বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ খুঁজতে তাদের বিষয়ে আবারও পুলিশ ভেরিফিকেশন শুরু হচ্ছে। এজন্য সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশে নিয়োগ পাওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের খুঁজে বের করতে সরকারের এই উদ্যোগ।

 

জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 

পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে যাওয়া ছয়টি বিসিএস হলো ২৮, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৪০ ও ৪১তম। এসব বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের আটটি তথ্য যাচাই করা হবে। পাশাপাশি তার রাজনৈতিক পরিচয়, পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও ক্যাম্পাস রাজনীতিতে ভূমিকা দেখা হবে।

 

গত ২০ অক্টোবর পুলিশের বিশেষ শাখা (এসসি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লিখিত ছয়টি বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের জীবনবৃত্তান্ত পুনরায় যাচাই-বাছাই করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একজন সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কম নয় এমন একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রেখে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

 

প্রতিবেদনে কর্মকর্তার নাম, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র, সচল একাধিক ফোন নম্বর, ই-মেইল, ফেসবুক, টিআইএন নম্বর এবং পাসপোর্ট নম্বর সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে।

 

চিঠিতে বলা হয়েছে, গোপনীয় প্রতিবেদনে কর্মকর্তা যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন তার নাম, সেশন ও অধ্যয়ন করা বিষয় এবং অবস্থান/আবাসিক হলের তথ্য দিতে হবে। ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য ছাড়াও প্রার্থী অন্য জেলায় অধ্যয়ন করে থাকলে সংশ্লিষ্ট জেলায় যোগাযোগ পূর্বক তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। (রক্ষিত মূল ভেরিফিকেশন নথি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম সংগ্রহ করে পুনরায় অধ্যয়নকালীন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে)।

 

এ ছাড়া কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন করে বন্ধুর নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর, সংশ্লিষ্ট থানার রেকর্ড (সিডিএমএসের তথ্য) যাচাই করে দিতে হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

 

আরও বলা হয়, প্রার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লেষ ছাড়াও কোনোরূপ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় জড়িত কি না সেই তথ্য দিতে হবে। প্রার্থী সম্পর্কে এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং তার সমসাময়িক বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।

 

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া ২০১১ সালে ২৯তম বিসিএসে ৩৫ জন, ২০১২ সালে ৩০তম বিসিএসে ১৮৪ জন, ২০১৩ সালে ৩১তম বিসিএসে ১৮৪ জন, ২০১৪ সালে ৩৩তম বিসিএসে ১৫৫ জন ও ২০১৬ সালে ৩৪তম বিসিএসে ১৪৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদেরও গোপন অনুসন্ধানের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

আরও পড়ুন: ‘আ.লীগের ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’ রওশন এখন কোথায়?’

এর বাইরে ২০২৩ সালের ৪০তম ক্যাডেট এসআইদের মধ্যে ৮২৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১৭৬ জন অমুসলিম ছিলেন। ৪০তম ক্যাডেট এসআইদের মধ্যে ৯৩ জন অমুসলিমসহ ২৫২ জনকে ইতোমধ্যে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে: আইজিপি

আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে গোপন তদন্ত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তদন্ত বা অনুসন্ধানের বিষয়ে আমার জানা নেই।’

নিউজটি শেয়ার করুন

গোপন তদন্তের মুখে আ.লীগ আমলের পুলিশ কর্মকর্তারা

আপডেট সময় : ১২:১০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

গোপন তদন্তের মুখে পড়েছেন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যরা। এরই মধ্যে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকটি ব্যাচের গোপন তদন্ত শুরু হয়েছে। নন-ক্যাডার পুলিশ সদস্যদের বিষয়েও চলছে একাধিক গোপন তদন্ত। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এই তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

ছয়টি বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ খুঁজতে তাদের বিষয়ে আবারও পুলিশ ভেরিফিকেশন শুরু হচ্ছে। এজন্য সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশে নিয়োগ পাওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের খুঁজে বের করতে সরকারের এই উদ্যোগ।

 

জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 

পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে যাওয়া ছয়টি বিসিএস হলো ২৮, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৪০ ও ৪১তম। এসব বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের আটটি তথ্য যাচাই করা হবে। পাশাপাশি তার রাজনৈতিক পরিচয়, পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও ক্যাম্পাস রাজনীতিতে ভূমিকা দেখা হবে।

 

গত ২০ অক্টোবর পুলিশের বিশেষ শাখা (এসসি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লিখিত ছয়টি বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের জীবনবৃত্তান্ত পুনরায় যাচাই-বাছাই করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একজন সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কম নয় এমন একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রেখে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

 

প্রতিবেদনে কর্মকর্তার নাম, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র, সচল একাধিক ফোন নম্বর, ই-মেইল, ফেসবুক, টিআইএন নম্বর এবং পাসপোর্ট নম্বর সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে।

 

চিঠিতে বলা হয়েছে, গোপনীয় প্রতিবেদনে কর্মকর্তা যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন তার নাম, সেশন ও অধ্যয়ন করা বিষয় এবং অবস্থান/আবাসিক হলের তথ্য দিতে হবে। ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য ছাড়াও প্রার্থী অন্য জেলায় অধ্যয়ন করে থাকলে সংশ্লিষ্ট জেলায় যোগাযোগ পূর্বক তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। (রক্ষিত মূল ভেরিফিকেশন নথি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম সংগ্রহ করে পুনরায় অধ্যয়নকালীন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে)।

 

এ ছাড়া কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন করে বন্ধুর নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর, সংশ্লিষ্ট থানার রেকর্ড (সিডিএমএসের তথ্য) যাচাই করে দিতে হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

 

আরও বলা হয়, প্রার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লেষ ছাড়াও কোনোরূপ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় জড়িত কি না সেই তথ্য দিতে হবে। প্রার্থী সম্পর্কে এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং তার সমসাময়িক বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।

 

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া ২০১১ সালে ২৯তম বিসিএসে ৩৫ জন, ২০১২ সালে ৩০তম বিসিএসে ১৮৪ জন, ২০১৩ সালে ৩১তম বিসিএসে ১৮৪ জন, ২০১৪ সালে ৩৩তম বিসিএসে ১৫৫ জন ও ২০১৬ সালে ৩৪তম বিসিএসে ১৪৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদেরও গোপন অনুসন্ধানের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

আরও পড়ুন: ‘আ.লীগের ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’ রওশন এখন কোথায়?’

এর বাইরে ২০২৩ সালের ৪০তম ক্যাডেট এসআইদের মধ্যে ৮২৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১৭৬ জন অমুসলিম ছিলেন। ৪০তম ক্যাডেট এসআইদের মধ্যে ৯৩ জন অমুসলিমসহ ২৫২ জনকে ইতোমধ্যে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে: আইজিপি

আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে গোপন তদন্ত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তদন্ত বা অনুসন্ধানের বিষয়ে আমার জানা নেই।’