বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বাড়ছে আলু-পেুয়াজ-রসুনের দাম, কমেছে সবজির

বাড়ছে আলু-পেুয়াজ-রসুনের দাম, কমেছে সবজির

মো. জোনাব আলী

শীত মৌসুমের আগমনের আগেই বাজারে আমদানি বেড়েছে শীতকালীন সবজির। বিক্রেতারা বলছে, সরবরাহ থাকায় সবজির বাজারে দাম কিছুটা কম। তবে বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ ও চালের দাম।

দেশের বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গত এক মাসের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দর ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বাড়তি চাল ও আলুর দরও। এছাড়া, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে এমন পণ্যের মধ্যে আরও রয়েছে মসুর ডাল, রসুন ও ডিম। সব মিলিয়ে স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে বাজারের সবজি ও মাছের দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমেছে পেঁয়াজের। প্রতি বছরই এ সময় একই অবস্থা হয়। এ অবস্থায় একমাত্র ভরসা ‘মুড়িকাটা পেঁয়াজ’। তবে প্রতি বছর নভেম্বরের শুরুতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে এলেও এবার অতিবৃষ্টির কারণে সময়মতো চাষাবাদ করতে না পারায় এই পেঁয়াজ আসতে কিছুটা দেরি হবে।

শুক্রবার রাজধানীর শান্তিনগর, নিউমার্কেট ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক মাস আগেও তা যথাক্রমে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা ও ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৭ লাখ টন। এরমধ্যে ৫ থেকে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়। তবে যেহেতু আমদানিকৃত পেঁয়াজের বড় অংশই ভারত থেকে আমদানি করা হয় আর ভারতের বাজারেও এই সময় পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকে, ফলে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দরও বেশি পড়ে। এছাড়া, ভারত তাদের চাহিদা মেটাতে বছরের এই সময় কখনো কখনো পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধও করে থাকে। তখন দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) তথ্য বলছে, দেশে পেঁয়াজ উত্পাদনের বড় অংশ হয় বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে। সে সময় মোট দেশীয় উত্পাদনের ৮০ শতাংশ পেঁয়াজ কৃষক ঘরে তোলেন। তখন পেঁয়াজের দাম সবচেয়ে কম থাকে। এরপর জুন-জুলাইয়ে অল্প পরিমাণে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উত্পাদন হয়। তবে সেপ্টেম্বর নাগাদ দেশি পেঁয়াজের মজুত কমতে থাকে। এ সময় পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। সুযোগ নেয় মজুতদাররাও। নভেম্বরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম কিছুটা কমে।

আরও পড়ুন

সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ছাত্রলীগকর্মী গ্রেফতার

বাজারে শিমের কেজি ৪৮০ ধনে পাতা ৬০০, দুই-তিনটা সবজি কিনলেই শেষ ৫০০

সবজির দামে স্বস্তি, চড়া ডিম মুরগির বাজার

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র—গাজীপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুল হক এ প্রসঙ্গে ইত্তেফাককে বলেন, পেঁয়াজ একটি বৈশ্বিক ফসল। সারা পৃথিবীতেই এ সময় পেঁয়াজের ঘাটতি হয়। ভারত কোল্ড স্টোরেজে রেখে পেঁয়াজের এ ঘাটতি মেটায়। আমাদের এখানে এ সময় ‘মুড়িকাটা’ পেঁয়াজ দিয়ে ঘাটতি মেটানো হয়। তবে এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে আবাদ নষ্ট হওয়ায় ‘মুড়িকাটা’ পেঁয়াজ আসতে কিছুটা দেরি হবে।

তিনি বলেন, দেশে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের ঘাটতি মেটাতে গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য চুক্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কাজ চলছে। এদিকে সরবরাহ বাড়িয়ে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে। বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । দৈনিক প্রলয়