ঢাকা ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তাগাছায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের আবেদন

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:০৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩২১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তাগাছা উপজেলার সচেতন নাগরিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। মোহাম্মদ সাজাদুল করিম সচেতন নাগরিদের পক্ষ থেকে এই আবেদনটি গত ১৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর পৌছে দেন।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত সরকারের সময়ে রাজনৈতিক চাপের কারণে মুক্তাগাছার অনেক ফেইসবুক ব্যবহারকারীকে সরকারি ফেইসবুক একাউন্টগুলো থেকে ব্যান করা হয়েছিল। এর ফলে তাদের বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই, অবিলম্বে এসব ব্যবহারকারীর একাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করার দাবিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জনগণের মতামত ও সমস্যাগুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠিয়ে নিলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও মজবুত হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ওসি মুক্তাগাছা, Uno Muktagacha এবং Ac Land Muktagacha এর অফিসিয়াল ফেইসবুক একাউন্ট থেকে যারা ব্লকড আছেন, তাদের পুনঃপ্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হোক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে জনগণের উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাংবাদিক, বিশিষ্ট নাগরিক এবং সাধারণ ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা এ বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক আনিস তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘”মুক্তাগাছায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতীতে যেমন বাকস্বাধীনতা ছিল না, তেমনি ভবিষ্যতেও তা থাকা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরি।”

ডা. মাকামে মাহমুদ সামাজিক মাধ্যমে তার পোস্টে বলেন, “সম্প্রতি গণআন্দোলনে আমরা উপলব্ধি করেছি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কাজেই এই বিষয়টাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। স্বাধীনতা সর্বত্রই কাম্য।”

এছাড়া সাংবাদিক সাদেকুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “নিঃসন্দেহে এটি অত্যাবশ্যকীয় উদ্যোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যদি বাকরুদ্ধকর হয়, তাহলে সমাজের অবক্ষয় ও দুঃশাসন প্রশ্রয় পাবে। অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদমূলক তথ্য ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই বাকস্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষণ ও জনপ্রশাসনের সাথে জনগণের নিবিড় গণযোগাযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এটি উন্মুক্ত করা জরুরি এবং অপরিহার্য।”

তিনি আরও বলেন, “মুক্তাগাছা উপজেলা কর্মকর্তাদের জানাতে চাই, যদি তারা হরণ করা বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা না নেন, তবে এটি শ্বৈরাচারী দুঃশাসনের অংশ হিসেবে ধরা হবে।”

মুক্তাগাছার সাধারণ নাগরিকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করে, বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন, এই পদক্ষেপ শুধু বাকস্বাধীনতার জন্য নয়, বরং গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যও অপরিহার্য।

সচেতন নাগরিকদের এই উদ্যোগকে মুক্তাগাছার গণতন্ত্র ও সামাজিক সংহতির পুনর্গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

মুক্তাগাছায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের আবেদন

আপডেট সময় : ০৬:০৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তাগাছা উপজেলার সচেতন নাগরিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। মোহাম্মদ সাজাদুল করিম সচেতন নাগরিদের পক্ষ থেকে এই আবেদনটি গত ১৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর পৌছে দেন।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত সরকারের সময়ে রাজনৈতিক চাপের কারণে মুক্তাগাছার অনেক ফেইসবুক ব্যবহারকারীকে সরকারি ফেইসবুক একাউন্টগুলো থেকে ব্যান করা হয়েছিল। এর ফলে তাদের বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই, অবিলম্বে এসব ব্যবহারকারীর একাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করার দাবিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জনগণের মতামত ও সমস্যাগুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠিয়ে নিলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও মজবুত হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ওসি মুক্তাগাছা, Uno Muktagacha এবং Ac Land Muktagacha এর অফিসিয়াল ফেইসবুক একাউন্ট থেকে যারা ব্লকড আছেন, তাদের পুনঃপ্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হোক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে জনগণের উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাংবাদিক, বিশিষ্ট নাগরিক এবং সাধারণ ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা এ বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক আনিস তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘”মুক্তাগাছায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতীতে যেমন বাকস্বাধীনতা ছিল না, তেমনি ভবিষ্যতেও তা থাকা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরি।”

ডা. মাকামে মাহমুদ সামাজিক মাধ্যমে তার পোস্টে বলেন, “সম্প্রতি গণআন্দোলনে আমরা উপলব্ধি করেছি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কাজেই এই বিষয়টাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। স্বাধীনতা সর্বত্রই কাম্য।”

এছাড়া সাংবাদিক সাদেকুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “নিঃসন্দেহে এটি অত্যাবশ্যকীয় উদ্যোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যদি বাকরুদ্ধকর হয়, তাহলে সমাজের অবক্ষয় ও দুঃশাসন প্রশ্রয় পাবে। অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদমূলক তথ্য ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই বাকস্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষণ ও জনপ্রশাসনের সাথে জনগণের নিবিড় গণযোগাযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এটি উন্মুক্ত করা জরুরি এবং অপরিহার্য।”

তিনি আরও বলেন, “মুক্তাগাছা উপজেলা কর্মকর্তাদের জানাতে চাই, যদি তারা হরণ করা বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা না নেন, তবে এটি শ্বৈরাচারী দুঃশাসনের অংশ হিসেবে ধরা হবে।”

মুক্তাগাছার সাধারণ নাগরিকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করে, বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন, এই পদক্ষেপ শুধু বাকস্বাধীনতার জন্য নয়, বরং গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যও অপরিহার্য।

সচেতন নাগরিকদের এই উদ্যোগকে মুক্তাগাছার গণতন্ত্র ও সামাজিক সংহতির পুনর্গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়।