ঢাকা ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বন্যায় ডুবে গেছে সবজি ক্ষেত, বিপাকে কৃষক দূর্গাপুরে বন্যার পানিতে ডুবলো কৃষকের স্বপ্নের পান বরজ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে মিয়ানমারের নাগরিকসহ আটক ২ নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ২৭৬৩৭ জন নিয়োগ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেই আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এখন সিলেটের জেলা প্রশাসক চিকিৎসকদের দোষারোপ করে লাভ নেই, সচেতন হতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ: ইসি সচিব ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক ধর্মকে ব্যবসার হাতিয়ার বানাচ্ছে একটি মহল: রুমিন ফারহানা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য উপযোগী নয়: রিজভী

মঠবাড়িয়ায় বড় ভাইয়ের সনদ ও নাম ব্যবহার করে হাইস্কুলে চাকরি করে ছোট ভাই

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে

রুম্মান হাওলাদার, মঠবাড়িয়া

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় বড় ভাইয়ের সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করেন ছোট ভাই – এমন অভিযোগ উঠেছে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ফারুক হোসেন নামে ওই স্কুল শিক্ষক বড় ভাই হারুন অর রশীদের সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও নাম ব্যবহার করে মঠবাড়িয়া উপজেলার দধিভাঙ্গা আব্দুল হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।

তিনি টিকিকাটা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড দধিভাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক ফরাজীর ছেলে। জানা গেছে, খালেক ফরাজীর তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলের নাম আফজাল,মেঝো ছেলের নাম হারুন অর রশীদ এবং ছোট ছেলের নাম ফারুক হোসেন। তাদের তিন ভাইয়ের ৪টি এসএসসি সার্টিফিকেট রয়েছে। এরমধ্যে ফারুক হোসেন ১৯৯১ সালে হলতা কুমিরমারা আবু জাফর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। আর হারুন অর রশীদ রামনা শের-ই বাংলা সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাশ করেন।

এরপর হারুন অর রশীদ সামরিক বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন। কিন্তু একপর্যায়ে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য নির্ধারিত বয়স অতিক্রম করলে হারুন অর রশীদ বয়স কমানোর জন্য জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নিজে তারেক হোসেন নাম ধারন করে বামনা সরকারি সরোয়ার জাহান মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেনীতে ভর্তি হন। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৯৩ সালে পুনরায় এসএসসি পাশ করেন এবং বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। এছাড়াও হারুন অর রশীদের এইচএসসি পাশের সনদও রয়েছে। হারুন অর রশীদ ও তারেক হোসেন মূলত একই ব্যক্তি।

দুই নামে দু’টি এসএসসি সার্টিফিকেট থাকায় বিষয়টি যাতে কোন ভেরিফিকেশনে ধরা না পড়ে সেজন্য ছোট ভাই ফারুক হোসেন হারুন অর রশীদ নাম ধারন করেন। ফারুক হোসেন বড় ভাই হারুন অর রশীদের নাম ধারন করে হারুন অর রশীদের অর্জিত এসএসসি সনদ নিজের বলে ব্যবহার করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামে ৪ বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমা অর্জন করেন। বর্তমানে যে কর্মস্থলে তিনি শিক্ষকতা করেন সেখানে ব্যবহৃত এসএসসি সনদটি তার নিজের নয়। তারেক হোসেন নাম ধারন করা হারুন অর রশীদই এটি অর্জন করেছিলেন। দধিভাঙ্গা আব্দুল হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত সহকারী শিক্ষক (কৃষি) হারুন অর রশীদ মূলত ফারুক হোসেন। তিনি প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে ফারুক হোসেন নামে অর্জিত একাডেমিক সনদ ব্যবহার না করে বড় ভাই হারুন অর রশীদের সনদ দিয়ে চাকরি করে আসছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর একেএম আবুল খায়েরকে চিঠি প্রেরন করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. আবুয়াল কায়সার জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ফারুক হোসেন ওরফে ফারুক মাষ্টার জানান, কয়েকদিন আগে দু’জন সাংবাদিক আমার বাড়িতে আসছিল। তাদের সাথে কথা হয়েছে। তবে কি কথা হয়েছে তা জানাননি তিনি। অন্যদিকে হারুন অর রশীদ যিনি তারেক নাম ধারন করেছেন তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মঠবাড়িয়ায় বড় ভাইয়ের সনদ ও নাম ব্যবহার করে হাইস্কুলে চাকরি করে ছোট ভাই

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

রুম্মান হাওলাদার, মঠবাড়িয়া

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় বড় ভাইয়ের সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করেন ছোট ভাই – এমন অভিযোগ উঠেছে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ফারুক হোসেন নামে ওই স্কুল শিক্ষক বড় ভাই হারুন অর রশীদের সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও নাম ব্যবহার করে মঠবাড়িয়া উপজেলার দধিভাঙ্গা আব্দুল হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।

তিনি টিকিকাটা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড দধিভাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক ফরাজীর ছেলে। জানা গেছে, খালেক ফরাজীর তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলের নাম আফজাল,মেঝো ছেলের নাম হারুন অর রশীদ এবং ছোট ছেলের নাম ফারুক হোসেন। তাদের তিন ভাইয়ের ৪টি এসএসসি সার্টিফিকেট রয়েছে। এরমধ্যে ফারুক হোসেন ১৯৯১ সালে হলতা কুমিরমারা আবু জাফর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। আর হারুন অর রশীদ রামনা শের-ই বাংলা সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাশ করেন।

এরপর হারুন অর রশীদ সামরিক বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন। কিন্তু একপর্যায়ে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য নির্ধারিত বয়স অতিক্রম করলে হারুন অর রশীদ বয়স কমানোর জন্য জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নিজে তারেক হোসেন নাম ধারন করে বামনা সরকারি সরোয়ার জাহান মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেনীতে ভর্তি হন। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৯৩ সালে পুনরায় এসএসসি পাশ করেন এবং বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। এছাড়াও হারুন অর রশীদের এইচএসসি পাশের সনদও রয়েছে। হারুন অর রশীদ ও তারেক হোসেন মূলত একই ব্যক্তি।

দুই নামে দু’টি এসএসসি সার্টিফিকেট থাকায় বিষয়টি যাতে কোন ভেরিফিকেশনে ধরা না পড়ে সেজন্য ছোট ভাই ফারুক হোসেন হারুন অর রশীদ নাম ধারন করেন। ফারুক হোসেন বড় ভাই হারুন অর রশীদের নাম ধারন করে হারুন অর রশীদের অর্জিত এসএসসি সনদ নিজের বলে ব্যবহার করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামে ৪ বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমা অর্জন করেন। বর্তমানে যে কর্মস্থলে তিনি শিক্ষকতা করেন সেখানে ব্যবহৃত এসএসসি সনদটি তার নিজের নয়। তারেক হোসেন নাম ধারন করা হারুন অর রশীদই এটি অর্জন করেছিলেন। দধিভাঙ্গা আব্দুল হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত সহকারী শিক্ষক (কৃষি) হারুন অর রশীদ মূলত ফারুক হোসেন। তিনি প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে ফারুক হোসেন নামে অর্জিত একাডেমিক সনদ ব্যবহার না করে বড় ভাই হারুন অর রশীদের সনদ দিয়ে চাকরি করে আসছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর একেএম আবুল খায়েরকে চিঠি প্রেরন করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. আবুয়াল কায়সার জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ফারুক হোসেন ওরফে ফারুক মাষ্টার জানান, কয়েকদিন আগে দু’জন সাংবাদিক আমার বাড়িতে আসছিল। তাদের সাথে কথা হয়েছে। তবে কি কথা হয়েছে তা জানাননি তিনি। অন্যদিকে হারুন অর রশীদ যিনি তারেক নাম ধারন করেছেন তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।