বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৮ অপরাহ্ন

ঘটনাস্থলে না থেকেও মামলার প্রধান আসামী সাংবাদিক

আতিকুর রহমান শিপন, ঈশ্বরগঞ্জ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধে মারামারির ঘটনায় উপস্থিত না থাকার পরও উপজেলায় কর্মরত এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কুমড়াশাসন গ্রামে সাবেক মেম্বার কাজী আজিজুল হক ২০১৪ সালে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে হারুয়া বাসষ্ট্যান্ড নামক এলাকায় নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে একটি মার্কেট বেদখল করে নেয় মাইজবাগ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার কাজী আজিজুল হক।

এ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মামলা মোকাদ্দমা করেও কোন সুরাহা না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে হারুয়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসেন। দরবারের বিষয়টি পুলিশ, সেনাবাহিনী সকলেই অবগত থাকায় দরবারে কোন প্রকার হট্টগোল করতে পারেনি আজিজুল মেম্বার। এমনকি জোড় করে দখলে রাখা সম্পত্ত্বির বৈধ কোন কাগজপত্র সালিশ বৈঠকে দেখাতে পারেননি। দফায় দফায় সালিস হওয়ার পরেও কোন বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পারায় উপস্থিত গণ্যমান্য লোকজন আজিজুল মেম্বারকে জায়গাটির দখল ছেড়ে দিতে বলেন। নাছোড়বান্দা আজিজুল জায়গা না ছেড়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে প্রতিপক্ষকে। এ ঘটনার জেরে ১৪ ডিসেম্বর উভয় পক্ষে সংঘর্ষে আহত হয় কাজী আজিজুল হক।

এঘটনায় তার ছেলে কাজী আমিনুল হক কাউসার বাদী হয়ে ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ঈশ্বরগঞ্জ শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও দৈনিক ঢাকা প্রতিদিন পত্রিকার সাংবাদিক উবায়দুল্লাহ রুমি কে প্রধান আসামি করে ১২জনের নামে মামলা দায়ের করেন। সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে গেলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বিরোধপূর্ণ জায়গাটির কাগজপত্র মূলে মালিক ৩টি পক্ষ। একপক্ষ সাংবাদিক উবাদুল্লাহ রুমি আর বাকী ২টি পক্ষ তাঁর চাচাতো ভাই ও ভাতিজাগণ। মারামারির সময় সাংবাদিক রুমিসহ তার দুইভাইকে আমরা ঘটনার সময় দেখি নাই। তাদেরকে কিভাবে আসামি করা হলো তাও জানিনা। আহত কাজী আজিজুল হক মেম্বার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার নামে হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই, ভূমি আত্মসাৎসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য হওয়ার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বিভিন্ন নিরিহ লোকদের নির্যাতন ও হয়রানি করে আসছিল এই আজিজুল মেম্বার। আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার কারণে এতোদিন তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ মুখ খোলতে পারেননি। এ ব্যাপারে সাংবাদিক উবায়দুল্লাহ রুমির সাথে কথা হলে দৈনিক প্রলয়কে তিনি জানান, ঘটনার সময় আমি নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে মারামারির সংবাদ পেয়ে বিষয়টি তাৎকনিক ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি তদন্তকে অবহিত করে ঈশ্বরগঞ্জ চলে যাই। পরদিন বাদীর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারি আমাকে মামলার হুকুমের আসামি করা হয়েছে। অথচ এঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা এবং আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।

এব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান জানান, সাংবাদিক উবায়দুল্লাহ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বিষয়টি জানতে পেরেছি। কিন্তু বাদীর ঘোর আপত্তিতে তাকে আসামি করতে হয়েছে। সুষ্টু তদন্তে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হবে।

বাদী পক্ষের লোকজন সাংবাদিক রুমিসহ তার পরিবারের লোকজনের উপর যেকোন সময় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক। তিনি এখন বাদী পক্ষের প্রাণনাশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সাংবাদিক রুমির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সুষ্টু তদন্তপুর্বক তাকে মামলা থেকে অব্যহতি প্রদানের দাবী জানিয়েছেন।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । দৈনিক প্রলয়