ঢাকা ০৮:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাবনায় পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে মানববন্ধন  

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:২১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৬০ বার পড়া হয়েছে
পাবনা প্রতিনিধি
পাবনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের দাবিতে রাস্তায় পেঁয়াজ ফেলে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকেরা। বুধবার বিকেলে জেলার সর্বাধিক পেঁয়াজ উৎপাদনকারী সুজানগর উপজেলার পাবনা-সুজানগর মহাসড়ক অবরোধ করে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি জানান তারা।
বিক্ষুব্ধ চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে তাদের রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় দফায় বাড়তি মূল্যে পেঁয়াজের কন্দ কিনে খরচ হয়েছে প্রায় দ্বিগুণের বেশী। কিন্তু উত্তোলন মৌসুমে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপক পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করায় বড় দর পতন ঘটেছে পেঁয়াজের বাজারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাবনায় পাইকারী মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম মণ প্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা কমে যাওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচও উঠছে না। পাশাপাশি বিরূপ আবহাওয়ায় ফলন কম হওয়ায় লোকসানে পড়েছেন কৃষকেরা।
সুজানগর বাজারের কয়েকজন আড়তদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহে প্রতিমণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা বিক্রি হলেও, বুধবার তা কমে দাড়িয়েছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায়। এতে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। বিদেশী পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় নতুন ওঠা পেঁয়াজে পাইকাররা খুব একটা আগ্রহও দেখাচ্ছেন না।
চরতারাপুর বাহিরচর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মো. রাব্বি বলেন, এ বছর পেঁয়াজের কন্দ অস্বাভাবিক দামে কিনতে হয়েছে। মণ প্রতি আট থেকে নয় হাজার টাকা। অতিবৃষ্টির কারণে আবার ক্ষেত নষ্ট হয়েছে ফলে নতুন করে রোপন করতে খরচ দ্বিগুণ বেড়েছে। পাশাপাশি সার, কীটনাশকসহ সব উপকরণের দাম বাড়ায় আমাদের বিঘাপ্রতি খরচ প্রায় দুই লাখ টাকায় ঠেকেছে। অথচ এখন বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির কারণে আমাদের পেঁয়াজের দাম পাচ্ছি না।
পেঁয়াজ চাষি ফিরোজ প্রামাণিক বলেন, প্রতি বিঘায় সাধারণত ৫০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও এবার প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আমরা পেয়েছি ৩০ থেকে ৩৫ মণ। এরপর দামও কম। ফলে আমাদের বিঘাপ্রতি প্রায় ১ লাখ টাকার মতো লোকসান হচ্ছে। ধার দেনা করে চাষ করা পেঁয়াজ থেকে লাভ তো দূরের কথা আমরা ঋণের পাহাড়ে চাপা পড়ছি।
এ পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ করে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের দাবী চাষিদের। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচিরও হুশিয়ারি দেন তারা।
সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল আলম বলেন, হঠাৎ করেই বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে গেছে। এই দামে নিশ্চিতভাবেই কৃষকের লোকসান হচ্ছে। আমরা চাষিদের অল্প অল্প করে পেঁয়াজ বাজারে আনতে পরামর্শ দিয়েছি। পরিস্থিতি সম্পর্কে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমদানি বন্ধের বিষয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সাথে পরামর্শ করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাবনায় পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে মানববন্ধন  

আপডেট সময় : ০৪:২১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
পাবনা প্রতিনিধি
পাবনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের দাবিতে রাস্তায় পেঁয়াজ ফেলে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকেরা। বুধবার বিকেলে জেলার সর্বাধিক পেঁয়াজ উৎপাদনকারী সুজানগর উপজেলার পাবনা-সুজানগর মহাসড়ক অবরোধ করে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি জানান তারা।
বিক্ষুব্ধ চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে তাদের রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় দফায় বাড়তি মূল্যে পেঁয়াজের কন্দ কিনে খরচ হয়েছে প্রায় দ্বিগুণের বেশী। কিন্তু উত্তোলন মৌসুমে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপক পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করায় বড় দর পতন ঘটেছে পেঁয়াজের বাজারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাবনায় পাইকারী মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম মণ প্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা কমে যাওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচও উঠছে না। পাশাপাশি বিরূপ আবহাওয়ায় ফলন কম হওয়ায় লোকসানে পড়েছেন কৃষকেরা।
সুজানগর বাজারের কয়েকজন আড়তদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহে প্রতিমণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা বিক্রি হলেও, বুধবার তা কমে দাড়িয়েছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায়। এতে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। বিদেশী পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় নতুন ওঠা পেঁয়াজে পাইকাররা খুব একটা আগ্রহও দেখাচ্ছেন না।
চরতারাপুর বাহিরচর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মো. রাব্বি বলেন, এ বছর পেঁয়াজের কন্দ অস্বাভাবিক দামে কিনতে হয়েছে। মণ প্রতি আট থেকে নয় হাজার টাকা। অতিবৃষ্টির কারণে আবার ক্ষেত নষ্ট হয়েছে ফলে নতুন করে রোপন করতে খরচ দ্বিগুণ বেড়েছে। পাশাপাশি সার, কীটনাশকসহ সব উপকরণের দাম বাড়ায় আমাদের বিঘাপ্রতি খরচ প্রায় দুই লাখ টাকায় ঠেকেছে। অথচ এখন বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির কারণে আমাদের পেঁয়াজের দাম পাচ্ছি না।
পেঁয়াজ চাষি ফিরোজ প্রামাণিক বলেন, প্রতি বিঘায় সাধারণত ৫০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও এবার প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আমরা পেয়েছি ৩০ থেকে ৩৫ মণ। এরপর দামও কম। ফলে আমাদের বিঘাপ্রতি প্রায় ১ লাখ টাকার মতো লোকসান হচ্ছে। ধার দেনা করে চাষ করা পেঁয়াজ থেকে লাভ তো দূরের কথা আমরা ঋণের পাহাড়ে চাপা পড়ছি।
এ পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ করে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের দাবী চাষিদের। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচিরও হুশিয়ারি দেন তারা।
সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল আলম বলেন, হঠাৎ করেই বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে গেছে। এই দামে নিশ্চিতভাবেই কৃষকের লোকসান হচ্ছে। আমরা চাষিদের অল্প অল্প করে পেঁয়াজ বাজারে আনতে পরামর্শ দিয়েছি। পরিস্থিতি সম্পর্কে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমদানি বন্ধের বিষয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সাথে পরামর্শ করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।