বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর-ডেপুটি গভর্নরদের লেনদেন খতিয়ে দেখছে দুদক

- আপডেট সময় : ১১:০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ও ছয় ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়ে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, লেনদেনের বিবরণ, ‘কেওয়াইসি’ (KYC) ফরমসহ বিস্তারিত তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো হিসাব বন্ধ থাকলেও তার তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিএফআইইউর পক্ষ থেকে পাঠানো এ চিঠিতে যাদের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আতিউর রহমান বিদেশে চলে যান। আব্দুর রউফ তালুকদার গত বছরের ৭ আগস্ট পলাতক অবস্থায় ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান।
এছাড়া তালিকায় থাকা ছয় সাবেক ডেপুটি গভর্নরের মধ্যে আছেন— এস কে সুর চৌধুরী, সাবেক বিএফআইইউ প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস, আবু হেনা মো. রাজী হাসান, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছের। এর মধ্যে এস কে সুর চৌধুরী ও মাসুদ বিশ্বাস বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আর্থিক লেনদেন নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, গত ১৫ বছরে ঋণ কেলেঙ্কারি, নীতিমালায় বিশেষ সুবিধা প্রদান, রিজার্ভ চুরি, বেসিক ব্যাংক জালিয়াতি, হলমার্ক কেলেঙ্কারি এবং এস আলম গ্রুপসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক খাতকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সাবেক গভর্নরদের নথি ও সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট তলব করা হয়েছে।
এছাড়া ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার পর যে নতুন নীতিমালা জারি হয়েছিল, তাতে সুবিধা পাওয়া বেশ কিছু বড় শিল্পগোষ্ঠী— যেমন বেক্সিমকো গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, কেয়া গ্রুপ, রতন গ্রুপ, থার্মেক্স গ্রুপ, শিকদার গ্রুপ, বিবিএস গ্রুপ, আব্দুল মোনেম গ্রুপ ও এনানটেক্স গ্রুপ— এর ঋণ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে।
দুদক বলছে, এই তদন্তের লক্ষ্য হলো ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থনৈতিক অনিয়মের চক্র উন্মোচন করা।