বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
পেয়ার আলী, ঠাকুরগাঁও
প্রাচীন কাল থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের কাছে ছিলো ঢাক আর ঢোল প্রিয়। আদিবাসীরা যে কোন অনুষ্ঠানে ঢাক আর ঢোল বাজাতেন। এবং কারো বিয়ে অনুষ্ঠানে এইটার প্রচলন ছিলো প্রচীনকাল থেকে। পাশ্ববর্তী দেশে ভারতবর্ষে এর উল্টা হয়েছে সেইখানে আর নেই কোন ঢাক আর ঢোল বাজানোর সুর। ভারতে বা বাংলাদেশের যদিও দেখা যায় বিয়ের কোন অনুষ্ঠানে কেউ কেউ ঢোল আর ঢাক বাজান।
বলা যায় যে, এই দেশের আদিবাসীরা গ্রামে প্রায় ১০০% থেকে প্রায় ৮০ % মানুষ ভারতীয় ভোজপুরী হারানভী বা ডিজে গানে মতোয়ার হয়ে পড়েছেন। বাকি ২০% আদিবাসী মানুষ নিজের প্রচীনকালের নিয়ম মেনে তাদের ছেলে মেয়ের বিয়ে উৎসব অনুষ্ঠানে ঢাক ঢোল বাজান। যতই দিন যাচ্ছে ততই আদিবাসী সমাজে এর ভিন্নরুপে বদল যাচ্ছে সাউন্ড সিষ্টেম এর প্রচলন।
এর ফলে আদিবাসী সমাজে দেখা দিতে পারে তাদের নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতি উপর বড় প্রভাব। হারিয়ে যেতে পারে তাদের সমাজ থেকে ঢাক আর ঢোল বাজানোর সুর। জানা যে, আদিবাসীরা যখন বিয়ে বা উৎসব অনুষ্ঠানে পালনের সময় ঢাক আর ঢোল বাজাতেন তখন ঢাক আর ঢোল বাজানোর সুরে মুখরিত হইতো তাদের পুরো গ্রামগুলা। তখন দূর দূরান্তে থেকে ছুটে আসতো নানা পেশার মানুষ তাদের ঢাক ঢোল আর মাদলের বাজানোর সুর শুনতে বা তাদের নিজস্ব ভাষায় গান আর নাচ দেখতে। কিন্তু বর্তমানে এখন তেমন আর আদিবাসী গ্রাম গুলাতে নানান পেশার মানুষের জনসমাগম হয় না।
এখন বর্তমানে সাউন্ড সিষ্টেম এর বক্সের জোরে জোরে শব্দ কারণে এলাকাগুলা শব্দ দূষণ এর পাশাপাশি হার্টঅ্যাটাক হওয়ার বেশি প্রভাব পড়ার ভয় রয়েছে। তাই এর ভয়ের কারণে বৃদ্ধ লোকেরা আসে না আদিবাসী গ্রামে গান আর নাচ দেখার জন্য। এখন আদিবাসী বিয়ে গুলাতে আদিবাসী ছেলে- মেয়েরা ভারতীয় ভোজপুরী নাগপুরী ডিজে গানে মাতোয়ারা হয়ে সারাত ভোর। তাই এই ছেলে- মেয়েদের নাচ দেখার জন্য যুবকরা ভীড় জোমান। এইভাবে যদি আদিবাসীরা তাদের প্রাচীন রীতি না মেনে চলে তাহলে খুব দ্রুত তাদের গ্রাম থেকে হারিয়ে যেতে পারে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঢাক ঢোল মাদল এর সুর। তাই আদিবাসী সচেতনমহলোর প্রতিনিধিকে এই বিষটা দেখতে হবে এবং এই ব্যাপারে আদিবাসী সমাজের সবাইকে অবহিত করতে হবে।