ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জিয়াউর রহমান এক দূরদর্শী নেতা ও দেশ গঠনের রূপকার: মোহাম্মদ মাসুদ ভালুকায় ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি গ্রেফতার রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরই ৩টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন: প্রধান উপদেষ্টা এদেশে সবার অধিকার সমান, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ থাকবে না: সেনাপ্রধান ইসলামী জোটে নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত আন্দোলন জামায়াত ও এনসিপির মতো কিছু গোষ্ঠী চায় না দেশে নির্বাচন হোক: দুলু কারচুপি প্রতিহতের প্রস্তুতি নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ত্রিশালে জমকালো আয়োজনে ক্রিকেট ফাইনাল খেলায় চ্যাম্পিয়ন ‘জুনিয়র টাইগার’ দুর্গাপুরে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে আনন্দ র‌্যালি চাঁদাবাজদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ড. ইউনূসের কূটনীতিতে বিস্মিত-বিরক্ত-বিচলিত ভারত!

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৭১ বার পড়া হয়েছে

ছবি অনলাইন সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি ফোনে কথা বলেছেন। ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলন ও গণবিপ্লবের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে পলায়নের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।

তবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে তিক্ত অবস্থায়। হাসিনার ভারতে অবস্থান বিরক্তিকর বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে, এছাড়া বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারও ভারতকে অবাক করেছে।

বিবিসির আনবারসান ইথিরাজান পরীক্ষা করে দেখছেন বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এখন ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আছে।

শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থি হিসেবে দেখা হতো এবং তার ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশের মধ্যেই ঘনিষ্ঠ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিল। তার ক্ষমতায় থাকা সময়টি ভারতের নিরাপত্তার জন্যও ছিল বেশ উপকারী, কারণ তিনি তার দেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারত-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দমন করেছিলেন এবং কিছু সীমান্ত বিরোধেরও নিষ্পত্তি করেছিলেন।

কিন্তু পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ভারতে হাসিনার অবস্থান তিনি কতদিন দেশটিতে থাকবেন সে বিষয়ে কোনও ধরনের স্পষ্টতাও নেই শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য দুই দেশের (বাংলাদেশ ও ভারতের) প্রচেষ্টাকেও জটিল করে তুলছে।

এটি গত সপ্তাহেই স্পষ্ট হয়ে যায় যখন ভারতীয় সংবাদসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ড. ইউনূস দিল্লিতে থাকার সময় হাসিনাকে কোনও ধরনের রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান।

হাসিনার প্রস্থানের পর নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ তাকে (হাসিনাকে) ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতেই চায়, তবে এক্ষেত্রে শর্ত থাকবে তাকে চুপ থাকতে হবে।’

এই মন্তব্যের মাধ্যমে ড. ইউনূস স্পষ্টতই গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনার বক্তব্যের কথাই উল্লেখ করেছেন। ওই সময় শেখ হাসিনা ‘ন্যায়বিচার’ দাবি করেছিলেন এবং বলেছিলেন, সাম্প্রতিক ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’, হত্যা ও ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের অবশ্যই তদন্ত, চিহ্নিত এবং শাস্তি দিতে হবে। হাসিনার এই বক্তব্য বাংলাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল এবং এরপর থেকে তিনি (হাসিনা) আর কোনো প্রকাশ্য বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি।

এছাড়া গত জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় মানুষ হত্যার জন্য হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দাবি জোরালো হয়েছে। ড. ইউনূস তার সাক্ষাৎকারে আরও বলেছিলেন, উভয় দেশকে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি করতে একসাথে কাজ করতে হবে। বর্তমানে এই সম্পর্ককে তিনি “নিম্ন পর্যায়ে” রয়েছে বলে বর্ণনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূসের এই বক্তব্যের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। তবে দেশটির কর্মকর্তারা “বিচলিত” বলে জানা গেছে।

ভারতীয় একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেছেন, “ভারত অপেক্ষা করছে এবং বাংলাদেশের চলমান ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছে। ঢাকা থেকে আসা সরকারি মতামত ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রকাশিত মতামত বিবৃতিগুলোকে নোট করছে ভারত।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ড. ইউনূসের কূটনীতিতে বিস্মিত-বিরক্ত-বিচলিত ভারত!

আপডেট সময় : ০৩:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি ফোনে কথা বলেছেন। ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলন ও গণবিপ্লবের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে পলায়নের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।

তবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে তিক্ত অবস্থায়। হাসিনার ভারতে অবস্থান বিরক্তিকর বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে, এছাড়া বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারও ভারতকে অবাক করেছে।

বিবিসির আনবারসান ইথিরাজান পরীক্ষা করে দেখছেন বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এখন ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আছে।

শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থি হিসেবে দেখা হতো এবং তার ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশের মধ্যেই ঘনিষ্ঠ কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিল। তার ক্ষমতায় থাকা সময়টি ভারতের নিরাপত্তার জন্যও ছিল বেশ উপকারী, কারণ তিনি তার দেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারত-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দমন করেছিলেন এবং কিছু সীমান্ত বিরোধেরও নিষ্পত্তি করেছিলেন।

কিন্তু পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ভারতে হাসিনার অবস্থান তিনি কতদিন দেশটিতে থাকবেন সে বিষয়ে কোনও ধরনের স্পষ্টতাও নেই শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য দুই দেশের (বাংলাদেশ ও ভারতের) প্রচেষ্টাকেও জটিল করে তুলছে।

এটি গত সপ্তাহেই স্পষ্ট হয়ে যায় যখন ভারতীয় সংবাদসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ড. ইউনূস দিল্লিতে থাকার সময় হাসিনাকে কোনও ধরনের রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান।

হাসিনার প্রস্থানের পর নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ তাকে (হাসিনাকে) ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতেই চায়, তবে এক্ষেত্রে শর্ত থাকবে তাকে চুপ থাকতে হবে।’

এই মন্তব্যের মাধ্যমে ড. ইউনূস স্পষ্টতই গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনার বক্তব্যের কথাই উল্লেখ করেছেন। ওই সময় শেখ হাসিনা ‘ন্যায়বিচার’ দাবি করেছিলেন এবং বলেছিলেন, সাম্প্রতিক ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’, হত্যা ও ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের অবশ্যই তদন্ত, চিহ্নিত এবং শাস্তি দিতে হবে। হাসিনার এই বক্তব্য বাংলাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল এবং এরপর থেকে তিনি (হাসিনা) আর কোনো প্রকাশ্য বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি।

এছাড়া গত জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় মানুষ হত্যার জন্য হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দাবি জোরালো হয়েছে। ড. ইউনূস তার সাক্ষাৎকারে আরও বলেছিলেন, উভয় দেশকে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি করতে একসাথে কাজ করতে হবে। বর্তমানে এই সম্পর্ককে তিনি “নিম্ন পর্যায়ে” রয়েছে বলে বর্ণনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূসের এই বক্তব্যের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। তবে দেশটির কর্মকর্তারা “বিচলিত” বলে জানা গেছে।

ভারতীয় একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেছেন, “ভারত অপেক্ষা করছে এবং বাংলাদেশের চলমান ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছে। ঢাকা থেকে আসা সরকারি মতামত ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রকাশিত মতামত বিবৃতিগুলোকে নোট করছে ভারত।”