বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা
ফরিদপুরে পুলিশের ওসি মোঃ দাউদ মিয়ার ক্ষমতা বলে প্রতিবন্ধীর জায়গা দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে পুলিশের ঐ ওসি মোঃ দাউদ মিয়া চট্রগ্রাম রেঞ্জে কর্মরত রয়েছেন। আর ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী মোঃ শওকত মিয়া ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইাউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে বসবাস করছেন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর, সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় কর্তৃক মোঃ শওকত মিয়ার প্রতিবন্ধি আইডি নং ২৯১৪৭৪৭২৭৬০৪৭-০২।
এ দিকে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী মোঃ শওকত মিয়া এই বিষয়ে, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক এবং ফরিদপুর দুর্নীতি দমন কমিশনে পুলিশের উর্ধতনকর্মকর্তাদের বরবর ঐ ওসির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, ফরিদপুর সদর থানার ১২৬ নং আলীপুর মৌজার বিএস ১৫৯০ নং খতিয়ানের বিএস ৫৪৯৪ নং দাগে ২:৩৭ শতক জায়গা তাদের পৈত্রিক এবং ওয়ারিশ সূত্রে তারা ঔ জমির মুল মালিক।
ঐ জমি পুলিশের ওসির ক্ষমতার অপব্যবহার করে দখল করে রেখেছেন বলে প্রতিবন্ধী শওকত মিয়া, গংদের অভিযোগ। এ কারনে তাদের মুল্যবান জমির দখল ও বুঝে পাচ্ছেন না এবং অন্যত্র বিক্রি ও করতে পারছেন না। এমন অবস্থা চলছে কয়েক বছর। অভিযোগে আরো উল্লেখ্য করা হয়, ওসি মোঃ দাউদ মিয়া, পিতা মোঃ মতিয়ার রহমান, মাতাঃ রাবেয়া বেগম, বাড়ি আলীপুর ইসলামিয়া হাসপাতাল সংলগ্ন মোকছেদ মিয়ার জমি ক্রয় সূত্রে, ২ শতকের বাড়ি মালিক। মোকছেদ আলী গংদের উল্লেখিত, দাগ ও খতিয়ানে ১৫ শতক জায়গার মধ্যে আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুকুলে ১০ শতক জমি সরকার অধিগ্রহণ করেন। বাকি ৫ শতক জায়গার মধ্যে ওসি দাউদের মা রাবেয়া বেগম কবলা দলিল মুলে ২ শতক জায়গা খরিদ করেন প্রতিবন্ধী শওকত মিয়ার বাবার কাছ থেকে।
বাকি ৩ শতক জায়গার মধ্যে সরকারি রাস্তায় কিছু অংশ কেটে গেলে, জমির মুল মালিক মোকছেদ আলী পিতাঃ মৃত্যু খোয়াজ উদ্দীন,মিয়া গ্রামঃ চানপুর,ঈশানগোপালপুর সদর থানার ফরিদপুরের নামে ২:৩৭ শতক জমি বিএস রেকর্ড হলেও ওখানে আরও প্রায় দেড় শতক জায়গা বেশী আছে বলে তৎকালীন পৌরসভার সার্ভেয়ার মোঃ জাহিদ হোসেন নিশ্চিত করছেন। এই বিষয়, অভিযোগকারী মোঃ শওকত মিয়া, বলেন আমার বাবার মৃত্যুর পর বাবার জায়গার মিউটেশন মুলে আমরা সকল ওয়ারিশগন আলাদা ভাবে ভোগদখলের কথা জানাই মতিয়ার এবং রাবেয়া গংদের।
সুষ্ঠু ভাবে আপোষ মিমাংশার কথাও বলি তাদেরকে কিন্ত তারা দীর্ঘ ৭/৮ বছর যাবৎ সময়ক্ষেপন করে কারোর কথাই আমলে নেননি। তারা আরো বলেন, বছর খানেক ঘোরাঘুরির পর পৌরসভার সার্ভেয়ার আমিন দিয়ে মাপজোপ করে আমাদের জায়গা দখলের পাঁকা খাম খুটি পুঁতলেও পুলিশের ওসির ৫ আগষ্টের আগের ক্ষমতা বলে তা তুলে ফেলেন বলে ভুক্তভোগী শওকত আলী গংদের অভিযোগ। রাবেয়ার পুত্র ওসি দাউদ মিয়া, কোন মতে আমাদের জমির কাছে যেতে দেয়নি। তারা তিন ভাই এক বোন থাকলেও কেউ আমাদের কথা শুনছেন না। আমরা ওসির কাছে যতোই দয়া ভিক্ষা চেয়েছি ততোই তিনি পুলিশ ক্ষমতার গরম ভাব এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল জুলুম করা বারংবার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রাখেন। ভয়ে আর তার কাছেও যেতে পারিনি।
বিচার চেয়েও বিচার পাইনি। হটাৎ গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ সালে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর, জুলুমকারী আওয়ামীলীগ আমলের ওসি দাউদকে পুনরায়, জমি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বললে, পূর্বের বোল পাল্টে আমাদের সাথে পুনরায় গলার সুর নরম করে প্রায় ৭ মাসে এ যাবৎ ১৫/১৬ বার বসার কথা বলে, কাগজপত্র নিয়ে বসে আমাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বললেও একবারও আপোষ করতে এগিয়ে আসেননি। উপরন্তু আমরা বহুভাবে নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
এই বিষয়, কথা ওসি মোঃ দাউদের সাথে। তিনি জানান, মোঃ শওকত মিয়া গংদের অভিযোগ একেবারেই সঠিক ও সত্যি নয়। জায়গা আমার মা ক্রয় করছেন,তার সকল সন্তানরাই জায়গার মালিক। আমি জমির কিছু অংশের ওয়ারিশ। মালিক একা নই। বসলে সবাইকে নিয়ে বসতে হবে। তাদের সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট এবং ষড়যন্ত্রমুলক। তারপরও আমি চেষ্টা করছি আমার বড় ভাই কে দিয়ে সমস্যাটা সমাধান করে ফেলব। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম রেঞ্জের দায়িত্বে আছেন বলে জানান। এ বিষয়ে কথা হয় ওসি দাউদের পূর্বের কর্মস্থল কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারের সাথে। তিনি বলেন যেহেতু ওসি দাউদ অন্য রেঞ্জে বদলি হয়েছে এই বিষয় আমার কিছু বলার নাই।