মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
ঈশ্বরগঞ্জ সংবাদদাতা
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে শতবর্ষী মহাশ্মশান ভাঙচুর ও উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে উপজেলার পৌর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের কাঁচামাটিয়া নদীর তীরে অবস্থিত প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো উচাখিলা মহাশ্মশানটি সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে সংকটের মুখে পড়ে। মহাশ্মশানের জায়গা দখল ও ভাংচুরের ঘটনায় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ মার্চ ২০২৫, ঈদের পূর্ব মুহূর্তে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে মহাশ্মশানের পাশের দীর্ঘ ৩৫-৪০ বছর ধরে দখল থাকা মালিকানাধীন দোকানপাট, সারের গুদাম ও কাঠের তৈরি আসবাবপত্র বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করা হয়। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্তরা আইনি আশ্রয় নিলে ঈশ্বরগঞ্জ চৌকি আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায়ও উপজেলা প্রশাসন আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে সেখানে বালু ভরাট কার্যক্রম চালিয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে মহাশ্মশানের সংলগ্ন এলজিইডি প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন শ্মশানের সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বাধা দিলেও প্রশাসন কোনো কথা না শুনেই অভিযান চালায়।
মহাশ্মশান কমিটির আহ্বায়ক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ জানান, উচাখিলা বাজারসংলগ্ন ও কাঁচামাটিয়া নদীতীরে ১৬ শতাংশ জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই সার্বজনীন মহাশ্মান। শ্মশানের পাশে গড়ে ওঠা মালিকানাধীন কিছু স্থাপনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সীমানা ও রাস্তা নিয়ে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তৎকালীন ইউএনও বিষয়টি সমাধান করে শ্মশানের ১৬ শতাংশ জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেন এবং দখলরত মালিকদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বান জানান।
কিন্তু মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে নতুন ইউএনও’র নির্দেশে মহাশ্মশানের নির্মাণাধীন সীমানাপ্রাচীর ভেঙে শ্মশানটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে মহাশ্মশানের ওপর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় ইউএনওর পদত্যাগ সহ, মহাশ্মশানের পাশে গরুহাট না বসানোর এবং শ্মশান রক্ষায় স্থায়ী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদুল আহমেদকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।