ঢাকা ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, দ্রুত মেরামতের দাবি

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:২৩:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ৪৯ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজার অফিস
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের তোড়ে কক্সবাজার সদর, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলায় ২.৭৪৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত কয়েকদিনের নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ -৫ ফুট উচ্চতায় বেড়েছে। জোয়ারের পানির তোড়ে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জোয়ারের পানির আঘাতে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলায় ক্ষতির শিকার হয় ১ দশমিক ৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গত শুক্রবার (৩০মে) সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমান ১৬৭ মিলিমিটার। শনিবারও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল রোববারও বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত ছিলো। জানা গেছে, কক্সবাজার উপকূলের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ২৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফ সমুদ্র উপকূলের অন্তত ১৫টি এলাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায়।

ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দারা জানান, বর্ষার আগে দুর্বল বেড়িবাঁধ বা অকেজো স্থান মেরামত করা হলে মানুষ রক্ষা পেতো। এখন দুর্যোগের সময় বেড়িবাঁধ মেরামত করে কিছুই হবেনা, ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত না হলে বারবার ক্ষতির মুখে পড়বে স্থানীয়রা। এসব বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, ‘বায়ুবিদ্যুৎ এলাকার বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ওঠানামা করছে। দ্বীপের ৭-৮ পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল মোর্শেদ জানান, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫টি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের তোড়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে মাতারবাড়ি ও ধলঘাটায় ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুতুবদিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ দশমিক ৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং সদরের ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে সাগরে পানি।

ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ অংশ মেরামতের কাজ চলছে বলে জানান নুরুল ইসলাম। এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শেষাংশে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতায় মেরিন ড্রাইভে আঘাত হানছে। এতে টেকনাফ অংশের দুই কিলোমিটারের বিভিন্ন জায়গায় চারটি অংশে ভাঙন ধরেছে। ভাঙন প্রতিরোধে দেওয়া জিও টিউব ব্যাগ ফুটো হয়ে ক্রমেই বিলীন হচ্ছে।

 

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ই-পেপার

কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, দ্রুত মেরামতের দাবি

আপডেট সময় : ০৬:২৩:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

কক্সবাজার অফিস
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের তোড়ে কক্সবাজার সদর, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলায় ২.৭৪৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত কয়েকদিনের নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ -৫ ফুট উচ্চতায় বেড়েছে। জোয়ারের পানির তোড়ে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জোয়ারের পানির আঘাতে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলায় ক্ষতির শিকার হয় ১ দশমিক ৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গত শুক্রবার (৩০মে) সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমান ১৬৭ মিলিমিটার। শনিবারও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল রোববারও বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত ছিলো। জানা গেছে, কক্সবাজার উপকূলের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ২৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফ সমুদ্র উপকূলের অন্তত ১৫টি এলাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায়।

ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দারা জানান, বর্ষার আগে দুর্বল বেড়িবাঁধ বা অকেজো স্থান মেরামত করা হলে মানুষ রক্ষা পেতো। এখন দুর্যোগের সময় বেড়িবাঁধ মেরামত করে কিছুই হবেনা, ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত না হলে বারবার ক্ষতির মুখে পড়বে স্থানীয়রা। এসব বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, ‘বায়ুবিদ্যুৎ এলাকার বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ওঠানামা করছে। দ্বীপের ৭-৮ পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল মোর্শেদ জানান, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫টি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের তোড়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে মাতারবাড়ি ও ধলঘাটায় ৯০৫ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুতুবদিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ দশমিক ৬৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং সদরের ভারুয়াখালীতে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে সাগরে পানি।

ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ অংশ মেরামতের কাজ চলছে বলে জানান নুরুল ইসলাম। এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শেষাংশে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতায় মেরিন ড্রাইভে আঘাত হানছে। এতে টেকনাফ অংশের দুই কিলোমিটারের বিভিন্ন জায়গায় চারটি অংশে ভাঙন ধরেছে। ভাঙন প্রতিরোধে দেওয়া জিও টিউব ব্যাগ ফুটো হয়ে ক্রমেই বিলীন হচ্ছে।

 

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা