ঢাকা ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উখিয়ায় ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে চাকরিচ্যুত স্থানীয় শিক্ষকদের মানববন্ধন

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:২৬:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ৫৭ বার পড়া হয়েছে

শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়া
২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাকরি পুনর্বহালের আল্টিমেটাম, পূর্ণবহাল না হওয়া পর্যন্ত চলবে লাগাতার কর্মসূচি। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওদের অধীন ‘হোস্ট টিচার’ পদে নিযুক্ত স্থানীয়দের হঠাৎ করে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাল হয়ে উঠেছে উখিয়া শহর। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে শনিবার (৩১ মে) ও রবিবার (১ জুন) টানা অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। রবিবার সকাল ৭টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ব্যানার, প্লেকার্ড ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন চাকরিচ্যুত শিক্ষক এবং স্থানীয় জনতা। শিক্ষকদের এ ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন উখিয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ এবং সাধারণ জনগণ। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা বলেন, বিনা নোটিশে, বিনা পূর্বাভাসে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

আমরা দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক দায়িত্ব পালন করে এসেছি। অথচ আজ আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি চাকরিতে পুনর্বহাল না করা হয়, তাহলে আমরা লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটসহ বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক দিক বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছিলাম। আজ এনজিও কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের দিয়ে সব কাজ করাচ্ছেন। এটা চরম বৈষম্য ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

এনজিওগুলোর আচরণে মনে হচ্ছে, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত যেতে দিতে চায় না। বরং তাদের স্থায়ী করে ফায়দা লুটছে। মানববন্ধনে উপস্থিত উখিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বলেন, এই অমানবিক সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার না করা হলে জনগণ আন্দোলনে নামবে। এনজিওগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে। স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের চাকরিতে প্রাধান্য দেওয়া হলে সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে। সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে হঠাৎ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত শতাধিক হোস্ট টিচারকে চাকরিচ্যুত করে কয়েকটি আন্তর্জাতিক এনজিও।

অভিযোগ উঠেছে, পূর্ব কোন আলোচনা ছাড়াই দীর্ঘদিন চাকরিরত অভিজ্ঞ শিক্ষকদের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অথবা এনজিওকেন্দ্রিক অভ্যন্তরীণ পছন্দের ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক এই আন্দোলন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিস্থিতির পটভূমিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। স্থানীয়দের দাবি মানা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা 

নিউজটি শেয়ার করুন

ই-পেপার

উখিয়ায় ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে চাকরিচ্যুত স্থানীয় শিক্ষকদের মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৬:২৬:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়া
২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাকরি পুনর্বহালের আল্টিমেটাম, পূর্ণবহাল না হওয়া পর্যন্ত চলবে লাগাতার কর্মসূচি। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওদের অধীন ‘হোস্ট টিচার’ পদে নিযুক্ত স্থানীয়দের হঠাৎ করে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাল হয়ে উঠেছে উখিয়া শহর। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে শনিবার (৩১ মে) ও রবিবার (১ জুন) টানা অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। রবিবার সকাল ৭টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ব্যানার, প্লেকার্ড ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন চাকরিচ্যুত শিক্ষক এবং স্থানীয় জনতা। শিক্ষকদের এ ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন উখিয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ এবং সাধারণ জনগণ। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা বলেন, বিনা নোটিশে, বিনা পূর্বাভাসে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

আমরা দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক দায়িত্ব পালন করে এসেছি। অথচ আজ আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি চাকরিতে পুনর্বহাল না করা হয়, তাহলে আমরা লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটসহ বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক দিক বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছিলাম। আজ এনজিও কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের দিয়ে সব কাজ করাচ্ছেন। এটা চরম বৈষম্য ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

এনজিওগুলোর আচরণে মনে হচ্ছে, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত যেতে দিতে চায় না। বরং তাদের স্থায়ী করে ফায়দা লুটছে। মানববন্ধনে উপস্থিত উখিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বলেন, এই অমানবিক সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার না করা হলে জনগণ আন্দোলনে নামবে। এনজিওগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে। স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের চাকরিতে প্রাধান্য দেওয়া হলে সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে। সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে হঠাৎ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত শতাধিক হোস্ট টিচারকে চাকরিচ্যুত করে কয়েকটি আন্তর্জাতিক এনজিও।

অভিযোগ উঠেছে, পূর্ব কোন আলোচনা ছাড়াই দীর্ঘদিন চাকরিরত অভিজ্ঞ শিক্ষকদের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অথবা এনজিওকেন্দ্রিক অভ্যন্তরীণ পছন্দের ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক এই আন্দোলন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিস্থিতির পটভূমিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। স্থানীয়দের দাবি মানা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা