ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ অবসান চান টিউলিপ

- আপডেট সময় : ০৩:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫
- / ২ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করা টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মুদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন ভ্রমণের সময় এ সাক্ষাৎ করতে চান তিনি। এ সাক্ষাতে বাংলাদেশি সরকারের সঙ্গে ‘ভুল বুঝাবুঝির’ অবসান করতে চান টিউলিপ, যারা কি না সাবেক সিটি মিনিস্টারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছিল। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।
বাংলাদেশে গত বছরের আগস্টে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। গত সপ্তাহে টিউলিপের খালার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের শুনানি শুরু হয়। তবে, এ সময় উপস্থিত ছিলেন না শেখ হাসিনা।
টিউলিপ ও তার মা শেখ রেহেনার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির দাবি, টিউলিপ কিংবা তার মা ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাত হাজার ২০০ স্কয়ার ফুটের প্লট বা জমি নিয়েছেন।
তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন টিউলিপ। তার আইনজীবীরা বলছেন, এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশে প্রণোদিত এবং এর কোনো ভিত্তি নেই। পরবর্তীতে টিউলিপ দাবি করেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ অভিযোগের বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।
গত বছর ইকোনোমিক সেক্রেটারি ও সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। তবে, তার বিরুদ্ধে আনীত কোনো অভিযোগের প্রমাণ পায়নি যুক্তরাজ্য সরকার।
গার্ডিয়ান বলছে, নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মুদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন টিউলিপ। ওই চিঠিতে ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ করেন সাবেক সিটি মিনিস্টার। এ সাক্ষাতে চলমান বিতর্ক নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে চান তিনি।
চিঠিতে টিউলিপ লিখেছেন, তিনি আশা করেন, সম্ভাব্য বৈঠক ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিটির দ্বারা সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়া আমার মায়ের বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার সম্পর্কের বিষয়টি তুলতে চায়
সাবেক সিটি মিনিস্টার চিঠিতে লেখেন, ‘আমি একজন যুক্তরাজ্যের নাগরিক। জন্মেছি লন্ডনে এবং হ্যাম্পস্টেড ও হাউগেটের মানুষদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ এক দশক কাজ করেছি। বাংলাদেশে থাকা কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসার প্রতি আমার কোনো আগ্রহ নেই। দেশটি আমার হৃদয়ে থাকলে সেটি আমার দেশ নয়। আমার দেশ যেখানে আমি জন্মেছি, বড় হয়েছি ও নিজের ক্যারিয়ার করেছি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি দুদকের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তারা লন্ডনে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। স্পষ্টতই ঢাকার একটি এলোমেলো ঠিকানায় চিঠিপত্র পাঠাচ্ছে।’
‘এই ফ্যান্টাসি তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ গণমাধ্যমকে জানানো হয়। তবুও আমার আইনি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় না,’ যোগ করেন তিনি। চিঠিতে টিউলিপ লেখেন, ‘আমি জানি, তুমি বুঝতে পারবে যে এ প্রতিবেদনগুলো আমার নির্বাচনি এলাকা ও দেশের জন্য আমার সর্বোচ্চ চেষ্টার বিক্ষেপের কারণ হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা ও তার পরিবার কাঠামোগত উন্নয়নের নামে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড অর্থ পাচার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ববি হাজ্জাজ। সেসব অভিযোগের সত্যতার চেষ্টায় রয়েছে দুদক।
টিউলিপের দাবি, তার খালার প্রতিপক্ষরা তাকে লক্ষ্য করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক অপপ্রচার চালাচ্ছে। গত মাসে টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
সাবেক সিটি মিনিস্টারের দাবি, তিনি গ্রেফতারি পরোয়ানা সম্পর্কে কিছু জানেন না। এমনকি তাকে বাংলাদেশে নিতে হলে যুক্তরাজ্য সরকার উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে।