উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অধিবেশন মুলতবি

- আপডেট সময় : ০৫:১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
- / ১০২ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন। বিমানের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হয়। বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি স্কুলের একটি শিক্ষাকক্ষ ভবনের ওপর পড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, যেখানে অনেক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
দুর্ঘটনার ঘটনায় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে শোকজ্ঞাপন হিসেবে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী প্রার্থনা করেন। এরপর অধিবেশন আগামীদিন (২২ জুলাই) থেকে পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি জাতীয় সংহতি ও মানবিকতার মূল্যায়ন করে সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানান, যেন তারা এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিশ, নেজামে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শোক প্রকাশ করে আহত ও নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “মাইলস্টোন স্কুলের ওপর বিধ্বস্ত হওয়া এই বিমান দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আমরা শহীদ হিসেবে স্মরণ করি।” জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিও আহতদের দ্রুত আরোগ্যের জন্য সরকারের কাছে ত্বরিত চিকিৎসার ব্যবস্থা দাবি করেন। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের প্রতিও জোর দেন এবং ভবিষ্যতে এ রকম দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়।
ঐকমত্য কমিশনের সভায় প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার সুযোগ এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সংক্রান্ত আলোচনা চলছিল। সহসভাপতি আলী রীয়াজ উল্লেখ করেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ অপরিহার্য। তিনি বলেন, “এক-দুই দিন আলোচনা বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে, তবে কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়।”
সরকারি সূত্রে জানা যায়, প্রশিক্ষণ বিমানটি ২১ জুলাই দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে দ্রুত বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত স্থানে দ্রুত আগুন ধরে গেলে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।