অভিনব কায়দায় ৪ লাখ টাকা চুরি: ২ বছর পর পিবিআইয়ের রহস্য উদঘাটন, মূল আসামী গ্রেফতার

- আপডেট সময় : ০৬:০৮:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
- / ৫৫ বার পড়া হয়েছে
ময়মনসিংহ শহরের ছোট বাজার এলাকায় জনসমক্ষে অভিনব পদ্ধতিতে সংঘটিত ৪ লাখ টাকা চুরির ঘটনার ২ বছর পর অবশেষে রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই ময়মনসিংহ। তথ্যপ্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এই চুরির ঘটনায় জড়িত মূল আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ হান্নান মিয়া (৬২), পিতা- মৃত আলী মিয়া, স্থায়ী ঠিকানা—বাসা নং-৯৬, নাজিম উদ্দিন রোড, চকবাজার, ঢাকা। গত ২৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে পিবিআই ময়মনসিংহের একটি বিশেষ আভিযানিক দল তাকে ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার পেছনের কাহিনি:
২০২২ সালের ৯ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে শামছুল আলম (৬৫) নামের এক ব্যক্তি ময়মনসিংহ শহরের পূবালী ব্যাংক থেকে ৪ লাখ টাকা উত্তোলন করে জনতা ব্যাংকে লেনদেন শেষে ছোট বাজার এলাকায় লিমা প্রিন্টিং প্রেসের সামনে আসলে কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি হঠাৎ তার জামাকাপড়ে ময়লা ছিটিয়ে দেয়। এক ব্যক্তি তাকে বলেন, “আপনার জামায় ময়লা লেগেছে” এমন বলার পর তিনি জামা পরিষ্কার করতে ব্যাগটি পাশে রেখে দাঁড়ান। সেই মুহূর্তে অজ্ঞাত চোর দলটি ব্যাগসহ ৪ লাখ টাকা নিয়ে সটকে পড়ে।
ঘটনার পরপরই শামছুল আলম কোতোয়ালী থানায় ৩৭৯ ধারায় মামলা করেন (মামলা নম্বর- ৪৫(১১)২২)। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে থানা পুলিশ আসামী শনাক্তে ব্যর্থ হলে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই ময়মনসিংহ।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে সফলতা:
পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তারের দিকনির্দেশনায় এবং অ্যাডিশনাল আইজিপি মোঃ মোস্তফা কামাল এর তত্ত্বাবধানে এসআই (নিঃ) মোহাম্মদ বিল্লাল মিয়ার নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়। টিমটি দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামীর মুখাবয়ব চিহ্নিত করে।
তথ্য-প্রযুক্তি ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)-এর সাহায্যে শনাক্ত করা হয় চোর হান্নানকে। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে তাকে ঢাকার চকবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও অতীত অপরাধ:
পিবিআই’র প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হান্নান ৪ লাখ টাকা চুরির ঘটনা স্বীকার করে। ৩০ জুলাই ২০২৫ তারিখে তাকে আদালতে সোপর্দ করলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, হান্নান আন্তঃজেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিভিন্ন জেলায় একই কৌশলে সে চুরি করে এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
পিবিআই কর্মকর্তার বক্তব্য:
এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার জানান, প্রকাশ্য দিবালোকে জনাকীর্ণ এলাকায় চুরির ঘটনাটি ইলেকট্রনিক ও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। সিসিটিভির মাধ্যমে আসামী শনাক্ত কঠিন হলেও পিবিআই নিরলসভাবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সফলতা অর্জন করেছে। মামলার তদন্ত এখনো চলমান, আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।