ঢাকা ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জিয়াউর রহমান এক দূরদর্শী নেতা ও দেশ গঠনের রূপকার: মোহাম্মদ মাসুদ ভালুকায় ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি গ্রেফতার রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরই ৩টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন: প্রধান উপদেষ্টা এদেশে সবার অধিকার সমান, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ থাকবে না: সেনাপ্রধান ইসলামী জোটে নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত আন্দোলন জামায়াত ও এনসিপির মতো কিছু গোষ্ঠী চায় না দেশে নির্বাচন হোক: দুলু কারচুপি প্রতিহতের প্রস্তুতি নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ত্রিশালে জমকালো আয়োজনে ক্রিকেট ফাইনাল খেলায় চ্যাম্পিয়ন ‘জুনিয়র টাইগার’ দুর্গাপুরে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে আনন্দ র‌্যালি চাঁদাবাজদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাওয়ে নেতৃত্ব দেন বিচারপতি মানিক

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৩৬:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪৩ বার পড়া হয়েছে

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ‘জিয়াউর রহমান ফোবিয়ায়’ ভুগতেন। এ কারণে উচ্চ আদালতের বিচারিক দায়িত্ব পালনের পুরোটা সময় বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত রায় দিয়ে গেছেন।

আওয়ামী লীগের ক্যাডার বিতর্কিত বিচারপতি মানিক সম্পর্কে উচ্চ আদালতের আইনজীবী ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা বলেন, উচ্চ আদালতের অধিকাংশ মামলার শুনানিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বিষোদ্গার ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বিতর্কেরও জন্ম দেন তিনি।

প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম থাকায় বিতর্কিত রায় দিয়ে শিশু একাডেমি ও জিয়া শিুশু পার্ক উচ্ছেদের পথ করে দেন বিতর্কিত এই বিচারপতি। হাইকোর্টের কয়েকটি মামলার রায় পর্যালোচনা করে বিচারপতি মানিকের বিভিন্ন অপকর্ম সম্পর্কে জানা গেছে। তার দেওয়া অধিকাংশ রায়ে শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটত বলেও জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আইনজীবীরা জানান, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিচারকের আড়ালে ছিলেন শেখ হাসিনার লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্য। আদালতে তার দেওয়া অধিকাংশ রায়ে আইন ও বিধি-বিধানের পরিবর্তে শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রাধান্য থাকত। বিচারকের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরও জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটনা, অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করা ছিল তার নিত্যদিনের কর্মসূচি। বিভিন্ন সংগঠনের নামে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে ‘গালিগালাজ’ করতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন নিজেই। গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি পালন করে ‘কালা মানিক’ খ্যাতি পান। জাতীয় সংসদ তাকে অপসারণের রুলিং দিয়ে ‘স্যাডিস্ট’ আখ্যা দেয়। এটির উল্লেখ সংসদের কার্যবিবরণীতেও রয়েছে।

বিচারকের আসনে বসে শুধু জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেই বিষোদ্গার করেননি, আদালতের বাইরেও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোয় ভূমিকা পালন করে শেখ হাসিনার লাঠিয়াল বাহিনীর নেতৃত্ব দেন মানিক।

২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের মক্তিযুদ্ধের চেতনা বাণিজ্যের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবের ভূমিকা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভিন্ন ধরনের দেশবিরোধী অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি মানিকের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) বিএনপি চেয়ারপারসনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তার গুলশানের বাড়ি ঘেরাও করে।

বিচারপতি মানিককে আওয়ামী লীগের লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার হিসেবে উল্লেখ করেন বিএনপি নেতারা। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আমার দেশকে বলেন, আমরা আগে শুনতাম সাত রাজার ধন মানিক আর গত সাড়ে ১৫ বছরে শেখ হাসিনার দুঃশাসনের সময় দেখলাম এক রানির ধন মানিক। এই মানিক শুধু আওয়ামী লীগের লাঠিয়ালই ছিলেন না, তিনি জাতীয় সংসদ কর্তৃক স্বীকৃত একজন স্যাডিস্টও ছিলেন। এই লোকটি বিচারকের ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে বেআইনি সব কর্মকাণ্ড করে ঘৃণার পাত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। বিচার বিভাগ থেকে বিদায় নেওয়ার পরও জিয়া পরিবারের ওপর তিনি বিভিন্নভাবে তার জিঘাংসা ও ক্ষোভ চরিতার্থ করেছেন। চেয়ারপারসনের গুলশানের বাড়ি ঘেরাও করা তার নিকৃষ্ট উদাহরণ। তবে তার রানি হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে পারলেও ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, মানিক সীমান্তে ভবঘুরে অবস্থায় জনতার হাতে ধরা পড়েন। তার প্রতিটি অপকর্মের পৃথক বিচার হওয়া জরুরি বলেও মনে করেন বিএনপির এই নেতা।

নিউজটি শেয়ার করুন

খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাওয়ে নেতৃত্ব দেন বিচারপতি মানিক

আপডেট সময় : ০২:৩৬:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ‘জিয়াউর রহমান ফোবিয়ায়’ ভুগতেন। এ কারণে উচ্চ আদালতের বিচারিক দায়িত্ব পালনের পুরোটা সময় বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত রায় দিয়ে গেছেন।

আওয়ামী লীগের ক্যাডার বিতর্কিত বিচারপতি মানিক সম্পর্কে উচ্চ আদালতের আইনজীবী ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা বলেন, উচ্চ আদালতের অধিকাংশ মামলার শুনানিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বিষোদ্গার ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বিতর্কেরও জন্ম দেন তিনি।

প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম থাকায় বিতর্কিত রায় দিয়ে শিশু একাডেমি ও জিয়া শিুশু পার্ক উচ্ছেদের পথ করে দেন বিতর্কিত এই বিচারপতি। হাইকোর্টের কয়েকটি মামলার রায় পর্যালোচনা করে বিচারপতি মানিকের বিভিন্ন অপকর্ম সম্পর্কে জানা গেছে। তার দেওয়া অধিকাংশ রায়ে শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটত বলেও জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আইনজীবীরা জানান, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিচারকের আড়ালে ছিলেন শেখ হাসিনার লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্য। আদালতে তার দেওয়া অধিকাংশ রায়ে আইন ও বিধি-বিধানের পরিবর্তে শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রাধান্য থাকত। বিচারকের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরও জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটনা, অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করা ছিল তার নিত্যদিনের কর্মসূচি। বিভিন্ন সংগঠনের নামে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে ‘গালিগালাজ’ করতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন নিজেই। গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি পালন করে ‘কালা মানিক’ খ্যাতি পান। জাতীয় সংসদ তাকে অপসারণের রুলিং দিয়ে ‘স্যাডিস্ট’ আখ্যা দেয়। এটির উল্লেখ সংসদের কার্যবিবরণীতেও রয়েছে।

বিচারকের আসনে বসে শুধু জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেই বিষোদ্গার করেননি, আদালতের বাইরেও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোয় ভূমিকা পালন করে শেখ হাসিনার লাঠিয়াল বাহিনীর নেতৃত্ব দেন মানিক।

২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের মক্তিযুদ্ধের চেতনা বাণিজ্যের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবের ভূমিকা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভিন্ন ধরনের দেশবিরোধী অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি মানিকের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) বিএনপি চেয়ারপারসনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তার গুলশানের বাড়ি ঘেরাও করে।

বিচারপতি মানিককে আওয়ামী লীগের লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার হিসেবে উল্লেখ করেন বিএনপি নেতারা। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আমার দেশকে বলেন, আমরা আগে শুনতাম সাত রাজার ধন মানিক আর গত সাড়ে ১৫ বছরে শেখ হাসিনার দুঃশাসনের সময় দেখলাম এক রানির ধন মানিক। এই মানিক শুধু আওয়ামী লীগের লাঠিয়ালই ছিলেন না, তিনি জাতীয় সংসদ কর্তৃক স্বীকৃত একজন স্যাডিস্টও ছিলেন। এই লোকটি বিচারকের ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে বেআইনি সব কর্মকাণ্ড করে ঘৃণার পাত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। বিচার বিভাগ থেকে বিদায় নেওয়ার পরও জিয়া পরিবারের ওপর তিনি বিভিন্নভাবে তার জিঘাংসা ও ক্ষোভ চরিতার্থ করেছেন। চেয়ারপারসনের গুলশানের বাড়ি ঘেরাও করা তার নিকৃষ্ট উদাহরণ। তবে তার রানি হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে পারলেও ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, মানিক সীমান্তে ভবঘুরে অবস্থায় জনতার হাতে ধরা পড়েন। তার প্রতিটি অপকর্মের পৃথক বিচার হওয়া জরুরি বলেও মনে করেন বিএনপির এই নেতা।