ঢাকা ০৫:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জিয়াউর রহমান এক দূরদর্শী নেতা ও দেশ গঠনের রূপকার: মোহাম্মদ মাসুদ ভালুকায় ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি গ্রেফতার রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরই ৩টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন: প্রধান উপদেষ্টা এদেশে সবার অধিকার সমান, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ থাকবে না: সেনাপ্রধান ইসলামী জোটে নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত আন্দোলন জামায়াত ও এনসিপির মতো কিছু গোষ্ঠী চায় না দেশে নির্বাচন হোক: দুলু কারচুপি প্রতিহতের প্রস্তুতি নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ত্রিশালে জমকালো আয়োজনে ক্রিকেট ফাইনাল খেলায় চ্যাম্পিয়ন ‘জুনিয়র টাইগার’ দুর্গাপুরে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে আনন্দ র‌্যালি চাঁদাবাজদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি, তবুও কমেনি দাম!

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৯২ বার পড়া হয়েছে

সংগৃহীত ছবি

প্রলয় ডেস্ক

দেশের সংকটকালে দুই মাসে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ খালাস হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৮৮ টন। আমদানি বাড়লেও খুচরা বাজারে এখনো প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২০ টাকার নিচে মিলছে না।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতের বিকল্প দেশের পেঁয়াজ এলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই দাম কমছে না।

সরবরাহ বাড়ছে, ক্রমান্বয়ে দাম কমে আসবে। সারা বছর দেশের মানুষ প্রায় ৩০ লাখ টন পেঁয়াজ ব্যবহার করে। দেশে উৎপাদন হয় ২৩ লাখ টন। বাকি সাত লাখ টন আমদানি করতে হয়।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত দুই মাসে দুই লাখ ৮০ হাজার টন পেঁয়াজ আনতে আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) নেন দেশের আমদানিকারকরা। যার বেশির ভাগ আসার কথা ভারত থেকে। কিন্তু ভারতেও পণ্যটির দাম বেড়েছে। এ কারণে বিকল্প দেশ হিসেবে চীন, পাকিস্তান, মিসর ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করছেন তাঁরা।

আমদানিকৃত পেঁয়াজের বেশির ভাগ আসে ভারতের বেনাপোলসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে কম সময় লাগে। ফলে ব্যবসায়ীরা স্থলপথে আনতেই পছন্দ করেন। পণ্যটি পচনশীল হওয়ায় সমুদ্রপথে খুব একটা আমদানি করেন না তাঁরা। তবে ভারত দাম বাড়ালে কিংবা রপ্তানি বন্ধ করলে তখন বিকল্প দেশ থেকে আমদানি করতে বাধ্য হন।

সমুদ্রপথে কৃষিপণ্য আমদানি করলে সেটির খালাসের দায়িত্বে থাকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র। সংস্থাটির দেওয়া তথ্য মতে, জুলাই থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬৫ দিনে দেশে পেঁয়াজ এসেছে পাঁচ হাজার ৫৮৮ টন। দেশে সমুদ্রবন্দর দিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে করে জুলাই মাসে পেঁয়াজ এসেছে ৬৭০ টন। আগস্টে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৫০৯ টন। আর সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত আসে ৪০৯ টন। চীন থেকে ৬৬৫ টন, পাকিস্তান থেকে তিন হাজার ৪৯৮ টন, মিসর থেকে এক হাজার ১১ টন ও থাইল্যান্ড থেকে পাঁচ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, গত দুই মাসে ভারতসহ আরো চার দেশ থেকে দুই লাখ ৮০ হাজার টন পেঁয়াজ নিয়ে আসার অনুমতি পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে ভারত ছাড়া বাকি চার দেশ থেকে এসেছে সাড়ে পাঁচ হাজার টন। চীন, মিসর, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড থেকে ভারতের চেয়ে কম মূল্যে পেঁয়াজ আনা যাচ্ছে। এ সুযোগটাই নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আশা করছি, ক্রমান্বয়ে আইপি নেওয়া পেঁয়াজ দেশে আসবে।

ভারতের বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ এলেও দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ও চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে এখনো দাম কমেনি।

গতকাল বুধবার সকালে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এত দিন ভারত থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ এসেছে। বাড়তি দামের কারণে এখন সেখানে পণ্যটি আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আর ভারত থেকে পণ্যটি আনলে আমদানি খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এখন আড়তগুলোতে আগে মজুদ করে রাখা কিছু পণ্য রয়েছে। সেগুলোই বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০৩-১০৫ টাকা এবং দেশীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু চীন, মিসর, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ টাকার নিচে মিলছে না। মূলত পর্যাপ্ত আমদানি না হওয়ায় পণ্যটির সংকট তৈরি হয়েছে। আর চট্টগ্রামের খুচরা বাজার ও মুদির দোকানে পণ্যটি ১২০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

খাতুনগঞ্জের মায়ের দোয়া স্টোরের মালিক রনি বিশ্বাস বলেন, ‘দেশের মানুষ ভারতীয় পণ্যটিই বেশি ব্যবহার করে। আর চীন, পাকিস্তান ও মিসরের পেঁয়াজগুলো অনেক বড়। সেগুলো সালাদ হিসেবে বেশি ব্যবহার করে বাইরের দেশে। এখন আমরা ভারতীয় পণ্যটি বাড়তি দামের কারণে আড়তে রাখছি না। বিকল্পগুলোই রাখছি।’

খাতুনগঞ্জের আড়তদার ও হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস জানান, বাজারে এখনো ভারতীয় পেঁয়াজই বেশি রয়েছে। তবে সেখানে দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে আড়তগুলোতে তুলনামূলক কম আসছে। আর বিকল্প দেশ থেকে যে পেঁয়াজ আসছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। মূলত সে কারণেই পণ্যটির দাম কমছে না। তবে মানুষের চাহিদা অনেক কম। বিক্রিও আগের চেয়ে কমেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি, তবুও কমেনি দাম!

আপডেট সময় : ১২:১৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রলয় ডেস্ক

দেশের সংকটকালে দুই মাসে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ খালাস হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৮৮ টন। আমদানি বাড়লেও খুচরা বাজারে এখনো প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২০ টাকার নিচে মিলছে না।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতের বিকল্প দেশের পেঁয়াজ এলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই দাম কমছে না।

সরবরাহ বাড়ছে, ক্রমান্বয়ে দাম কমে আসবে। সারা বছর দেশের মানুষ প্রায় ৩০ লাখ টন পেঁয়াজ ব্যবহার করে। দেশে উৎপাদন হয় ২৩ লাখ টন। বাকি সাত লাখ টন আমদানি করতে হয়।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত দুই মাসে দুই লাখ ৮০ হাজার টন পেঁয়াজ আনতে আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) নেন দেশের আমদানিকারকরা। যার বেশির ভাগ আসার কথা ভারত থেকে। কিন্তু ভারতেও পণ্যটির দাম বেড়েছে। এ কারণে বিকল্প দেশ হিসেবে চীন, পাকিস্তান, মিসর ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করছেন তাঁরা।

আমদানিকৃত পেঁয়াজের বেশির ভাগ আসে ভারতের বেনাপোলসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে কম সময় লাগে। ফলে ব্যবসায়ীরা স্থলপথে আনতেই পছন্দ করেন। পণ্যটি পচনশীল হওয়ায় সমুদ্রপথে খুব একটা আমদানি করেন না তাঁরা। তবে ভারত দাম বাড়ালে কিংবা রপ্তানি বন্ধ করলে তখন বিকল্প দেশ থেকে আমদানি করতে বাধ্য হন।

সমুদ্রপথে কৃষিপণ্য আমদানি করলে সেটির খালাসের দায়িত্বে থাকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র। সংস্থাটির দেওয়া তথ্য মতে, জুলাই থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬৫ দিনে দেশে পেঁয়াজ এসেছে পাঁচ হাজার ৫৮৮ টন। দেশে সমুদ্রবন্দর দিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে করে জুলাই মাসে পেঁয়াজ এসেছে ৬৭০ টন। আগস্টে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৫০৯ টন। আর সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত আসে ৪০৯ টন। চীন থেকে ৬৬৫ টন, পাকিস্তান থেকে তিন হাজার ৪৯৮ টন, মিসর থেকে এক হাজার ১১ টন ও থাইল্যান্ড থেকে পাঁচ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, গত দুই মাসে ভারতসহ আরো চার দেশ থেকে দুই লাখ ৮০ হাজার টন পেঁয়াজ নিয়ে আসার অনুমতি পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে ভারত ছাড়া বাকি চার দেশ থেকে এসেছে সাড়ে পাঁচ হাজার টন। চীন, মিসর, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড থেকে ভারতের চেয়ে কম মূল্যে পেঁয়াজ আনা যাচ্ছে। এ সুযোগটাই নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আশা করছি, ক্রমান্বয়ে আইপি নেওয়া পেঁয়াজ দেশে আসবে।

ভারতের বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ এলেও দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ও চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে এখনো দাম কমেনি।

গতকাল বুধবার সকালে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এত দিন ভারত থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ এসেছে। বাড়তি দামের কারণে এখন সেখানে পণ্যটি আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আর ভারত থেকে পণ্যটি আনলে আমদানি খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এখন আড়তগুলোতে আগে মজুদ করে রাখা কিছু পণ্য রয়েছে। সেগুলোই বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০৩-১০৫ টাকা এবং দেশীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু চীন, মিসর, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ টাকার নিচে মিলছে না। মূলত পর্যাপ্ত আমদানি না হওয়ায় পণ্যটির সংকট তৈরি হয়েছে। আর চট্টগ্রামের খুচরা বাজার ও মুদির দোকানে পণ্যটি ১২০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

খাতুনগঞ্জের মায়ের দোয়া স্টোরের মালিক রনি বিশ্বাস বলেন, ‘দেশের মানুষ ভারতীয় পণ্যটিই বেশি ব্যবহার করে। আর চীন, পাকিস্তান ও মিসরের পেঁয়াজগুলো অনেক বড়। সেগুলো সালাদ হিসেবে বেশি ব্যবহার করে বাইরের দেশে। এখন আমরা ভারতীয় পণ্যটি বাড়তি দামের কারণে আড়তে রাখছি না। বিকল্পগুলোই রাখছি।’

খাতুনগঞ্জের আড়তদার ও হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস জানান, বাজারে এখনো ভারতীয় পেঁয়াজই বেশি রয়েছে। তবে সেখানে দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে আড়তগুলোতে তুলনামূলক কম আসছে। আর বিকল্প দেশ থেকে যে পেঁয়াজ আসছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। মূলত সে কারণেই পণ্যটির দাম কমছে না। তবে মানুষের চাহিদা অনেক কম। বিক্রিও আগের চেয়ে কমেছে।