বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ঈদের একদিনের ছুটি শেষে মেট্রোরেল চলাচল শুরু ড. ইউনূসকে শেহবাজের ফোন, পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার প্রয়াত সাংবাদিকদের স্মরণে পটুয়াখালী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবে দোয়া ও ইফতার ভাঙ্গায় দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ছাগল বিতরণ ময়মনসিংহে ৫২ ঘন্টায় সাজিত হত্যাকাণ্ডের মুলহোতা মন্টি গ্রেফতার গাজীপুরে ৫ জনকে আটক করে ৩ জনকে ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা ও ২ জনকে ননএফআইআর চরভদ্রাসনে আব্দুল করিম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে নগদ অর্থ বিতরণ ভাঙ্গায় হত্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন, হৃদরোগে মৃত্যুর অভিযোগ দৈনিক প্রলয় প্রত্রিকার উদ্যোগে ময়মনসিংহে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত রাণীশৈংকেলের রামরাই দিঘি

অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত রাণীশৈংকেলের রামরাই দিঘি

সিরাজুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও

অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকেল উপজেলার রামরাই দিঘি। কাক ডাকা ভোরে শীতের সময় প্রতি বছরে অতিথি পাখির আগমন ঘটে রাণীশৈংকেল উপজেলার রামরাই দিঘিতে, তাইতো এ দিঘিকে অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে বলা হয়। আর এ মৌসুমে দেশের নদ-নদী, হাওড়-বাঁওড়ের ভালোবাসার টানে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রামরাই দিঘিতে আসে এই নানান প্রজাতির পাখিগুলো।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এসব পাখি দেখতে যেমন সুন্দর, ঠিক তেমনই আকর্ষণীয় তাদের খুনসুটি। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। আর এই পাখির রাজ্য দেখতেই পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন অনেকেই রামরায় দিঘিতে।প্রাচীন ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন এই রামরায় দিঘি বরেন্দ্র ভূমির প্রাচীন জলাশয়গুলির মধ্যে আয়তনে দ্বিতীয় বৃহত্তম। এটি রাণীশংকৈল উপজেলা থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। পুকুরটি ১৮.৩৪ একর সু-উচ্চ পাড় ও ২৩.৮২ একর জলভাগসহ মোট ৪২.২০ একর বিশিষ্ট। পুকুরটির দৈর্ঘ্য (উত্তর-দক্ষিণ) ৯০০ মিটার ও প্রস্থ (পূর্ব-পশ্চিম) ৪০০ মিটার। এর সঠিক ইতিহাস এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে দিঘিটি ৫ শত থেকে ১ হাজার বছরের পুরনো হতে পারে।

একসময় এই দিঘি ছিল এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের পানির চাহিদা পূরণের উৎস। ২০০২ সালে রামরাই দিঘির নামকরণ করা হয় রাণী সাগর নামে তবে লোকমুখে এটি রামরাই দিঘি নামেই পরিচিত। এর চারপাশে প্রায় ১,২০০ এর অধিক লিচু গাছসহ বিভিন্ন গাছ লাগানো হয়েছে। চারিদিকে সবুজের সমারোহ আর দিঘির টলটলে জলরাশি মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের।প্রতি বছর শীত মৌসুমে ডিসেম্বরের শেষের দিকে ও জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে উত্তর মেরু, ইউরোপ, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, হিমালয়য়ের পদদেশ, তিব্বত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। সাদা বক, বালিয়া, পানকৌড়ি, ঘুঘু, সারস, রাতচোরা, গাংচিল, পাতিহাঁস, বুনোহাঁস, খঞ্জনা, ওয়ার্বলার, হাড়গিলা, স্নাইপ বা কাদাখাঁচা, কোকিল প্রভৃতি হাজার হাজার পাখির আগমনে দিঘির সৌন্দর্য বেড়ে যায়।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অতিথি পাখির ঝাঁক থাকে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘীপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখিরা। পাখিদের এই কলতানের টানে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমী পর্যটকরা। পাখিরা সাধারণত খাদ্যের প্রাচুর্যের কারণে এখানে আসে এবং মার্চ মাস শেষে আবার নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যায়।

উপজেলা পরিষদ দর্শনার্থীদের জন্য রামরায় দিঘিতে ইতিমধ্যেই নান্দনিক রূপ দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। দিঘির পাড়ে বসার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি ছাতার ছাউনি,বসার মাচা, একটি নৌকা, একটি কাঠের সেতু,রয়েছে দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীদের রাত্রী যাপনের ঘর,এবং তৈরি করা হয়েছে মুক্ত মঞ্চ।

আরো পড়ুন-

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, রামরাই-দিঘি এখন অতিথি পাখির অভয়াশ্রম। আমরা নিয়মিত নজর রাখছি। পাখি শিকারের কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি পাখি শিকার করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । দৈনিক প্রলয়