ঢাকা ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জিয়াউর রহমান এক দূরদর্শী নেতা ও দেশ গঠনের রূপকার: মোহাম্মদ মাসুদ ভালুকায় ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি গ্রেফতার রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরই ৩টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন: প্রধান উপদেষ্টা এদেশে সবার অধিকার সমান, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ থাকবে না: সেনাপ্রধান ইসলামী জোটে নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত আন্দোলন জামায়াত ও এনসিপির মতো কিছু গোষ্ঠী চায় না দেশে নির্বাচন হোক: দুলু কারচুপি প্রতিহতের প্রস্তুতি নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ত্রিশালে জমকালো আয়োজনে ক্রিকেট ফাইনাল খেলায় চ্যাম্পিয়ন ‘জুনিয়র টাইগার’ দুর্গাপুরে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে আনন্দ র‌্যালি চাঁদাবাজদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কুড়িগ্রামে চেতনানাশক খাইয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৯৫ বার পড়া হয়েছে

জাফর আহমেদ, কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা

কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার হস্ত বস্ত্র কুটির শিল্প মেলায় ডেকে নিয়ে কোমল পানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে বাড়িতে নিয়ে ১০ম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্য, ঠিকাদারসহ চারজনের নামে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর বাবা। এদিকে, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী কিশোরীর বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া এলাকায়।

পর গত রোববার (৩ আগস্ট) নাগেশ্বরী থানায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলাটি করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের গাগলা খামারটারী এলাকার রাব্বী মিয়া, নাগেশ্বরী পৌরসভা এলাকার বাঁশেরতলের জুলহাস মিয়া, রায়গঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব সাপখাওয়া এলাকার শফিয়ার রহমান ওরফে শফি কন্ট্রাক্টর এবং রায়গঞ্জ ইউনিয়নের গাটিরখামার এলাকার ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়া। এর মধ্যে রাব্বী মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়, রাব্বী মিয়া ওই কিশোরীর জেঠাতো বোনের স্বামী। সে প্রায়ই কিশোরীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতো। এ নিয়ে রাব্বীকে সতর্ক করেন কিশোরী। গত ২৩ জুলাই কিশোরীকে নাগেশ্বরী ডিএম একাডেমী ফুটবল মাঠে হস্ত, বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় ডেকে আনে। ঘোরাঘুরির পর কোমল পানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক খাওয়ালে সে অচেতন হয়ে পড়লে অভিযুক্ত রাব্বি তার গাগলা খামারটারীর ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে আবারও তাকে চেতনাশক খাওয়ায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাগেশ্বরী থেকে দূরপাল্লার বাসে ঢাকায় অজানা উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেয়। সকালে ঢাকায় পৌঁছার পর বাসের সুপারভাইজার দেখতে পায় কিশোরী অচেতন। পরে তাকে বোনের বাসায় নেন সুপারভাইজার। রাতে ফিরতি বাসে নাগেশ্বরী পাঠিয়ে দেন।

এদিকে, পরদিন সকালে নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামলে রাব্বী, জুলহাস ও মোতালেব মেম্বার জোর করে পৌরসভার হাসেম বাজার এলাকার ফারুক হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেও তাকে ধর্ষণ করে রাব্বী। আবারও তাকে চেতনানাশক খাওয়ানো হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় অচেতন কিশোরীকে নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ড এনে জুলহাসের হাতে তুলে দেয় রাব্বী। অটোরিকশায় করে রায়গঞ্জ বোর্ডের বাজারের পাশে শফিয়ের আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে কিশোরীকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে তাকে খুনের হুমকি দেন তারা। ভোরে কিশোরীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন ধর্ষকরা। পরে নানার বাড়িতে যায় কিশোরী। কিন্তু পাঁচদিন পর নাগেশ্বরী হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। থানায় অভিযোগ করলে তিন আগস্ট মামলা নেয় পুলিশ। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদী কিশোরীর বাবা জানান, আমি আসামিদের কঠিন বিচার চাই। সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার চাই। এক সপ্তাহ পরে থানায় অভিযোগের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, ৮দিন আমার মেয়ে কথা বলতে পারেনি। অচেতন ছিল। ও না বললে কার নামে মামলা করি। ঘটনা শুনে থানায় গেছি।বাড়ি ফেরার ৫দিন পর হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে জানান, বাংলা ডাক্তার (স্থানীয় চিকিৎসক) দিয়ে চিকিৎসার পর বেশি অসুস্থ হলে মেয়েকে হাসপাতালে নেয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাগেশ্বরী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহিম জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে (মঙ্গলবার) আসামিকে জেলে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে ঘটনা নিয়ে অনেক কিছু জানা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম জানান, মামলার প্রধান আসামি রাব্বি মিয়া গ্রেপ্তার আছে। ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগী কয়েকদিন পর থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্ত করে মামলা নেয়া হয়েছে। এখনও তদন্ত চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কুড়িগ্রামে চেতনানাশক খাইয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ০৮:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

জাফর আহমেদ, কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা

কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার হস্ত বস্ত্র কুটির শিল্প মেলায় ডেকে নিয়ে কোমল পানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে বাড়িতে নিয়ে ১০ম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্য, ঠিকাদারসহ চারজনের নামে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর বাবা। এদিকে, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী কিশোরীর বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া এলাকায়।

পর গত রোববার (৩ আগস্ট) নাগেশ্বরী থানায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলাটি করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের গাগলা খামারটারী এলাকার রাব্বী মিয়া, নাগেশ্বরী পৌরসভা এলাকার বাঁশেরতলের জুলহাস মিয়া, রায়গঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব সাপখাওয়া এলাকার শফিয়ার রহমান ওরফে শফি কন্ট্রাক্টর এবং রায়গঞ্জ ইউনিয়নের গাটিরখামার এলাকার ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়া। এর মধ্যে রাব্বী মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়, রাব্বী মিয়া ওই কিশোরীর জেঠাতো বোনের স্বামী। সে প্রায়ই কিশোরীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতো। এ নিয়ে রাব্বীকে সতর্ক করেন কিশোরী। গত ২৩ জুলাই কিশোরীকে নাগেশ্বরী ডিএম একাডেমী ফুটবল মাঠে হস্ত, বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় ডেকে আনে। ঘোরাঘুরির পর কোমল পানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক খাওয়ালে সে অচেতন হয়ে পড়লে অভিযুক্ত রাব্বি তার গাগলা খামারটারীর ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে আবারও তাকে চেতনাশক খাওয়ায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাগেশ্বরী থেকে দূরপাল্লার বাসে ঢাকায় অজানা উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেয়। সকালে ঢাকায় পৌঁছার পর বাসের সুপারভাইজার দেখতে পায় কিশোরী অচেতন। পরে তাকে বোনের বাসায় নেন সুপারভাইজার। রাতে ফিরতি বাসে নাগেশ্বরী পাঠিয়ে দেন।

এদিকে, পরদিন সকালে নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামলে রাব্বী, জুলহাস ও মোতালেব মেম্বার জোর করে পৌরসভার হাসেম বাজার এলাকার ফারুক হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেও তাকে ধর্ষণ করে রাব্বী। আবারও তাকে চেতনানাশক খাওয়ানো হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় অচেতন কিশোরীকে নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ড এনে জুলহাসের হাতে তুলে দেয় রাব্বী। অটোরিকশায় করে রায়গঞ্জ বোর্ডের বাজারের পাশে শফিয়ের আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে কিশোরীকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে তাকে খুনের হুমকি দেন তারা। ভোরে কিশোরীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন ধর্ষকরা। পরে নানার বাড়িতে যায় কিশোরী। কিন্তু পাঁচদিন পর নাগেশ্বরী হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। থানায় অভিযোগ করলে তিন আগস্ট মামলা নেয় পুলিশ। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদী কিশোরীর বাবা জানান, আমি আসামিদের কঠিন বিচার চাই। সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার চাই। এক সপ্তাহ পরে থানায় অভিযোগের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, ৮দিন আমার মেয়ে কথা বলতে পারেনি। অচেতন ছিল। ও না বললে কার নামে মামলা করি। ঘটনা শুনে থানায় গেছি।বাড়ি ফেরার ৫দিন পর হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে জানান, বাংলা ডাক্তার (স্থানীয় চিকিৎসক) দিয়ে চিকিৎসার পর বেশি অসুস্থ হলে মেয়েকে হাসপাতালে নেয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাগেশ্বরী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহিম জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে (মঙ্গলবার) আসামিকে জেলে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে ঘটনা নিয়ে অনেক কিছু জানা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম জানান, মামলার প্রধান আসামি রাব্বি মিয়া গ্রেপ্তার আছে। ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগী কয়েকদিন পর থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্ত করে মামলা নেয়া হয়েছে। এখনও তদন্ত চলছে।