ঋণের দায়ে ২ সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা

- আপডেট সময় : ০৯:৩৫:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪৭ বার পড়া হয়েছে
নাজিম হাসান,রাজশাহী
রাজশাহীর পবা উপজেলায় ঋণের দায়ে এবং খাওয়ার অভাবে দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড় গ্রামে কোনো একসময় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার সকালে এখবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকজেুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহতরা হলেন, মিনারুল ইসলাম (৩৫), তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) এবং মেয়ে মিথিলা (৩)।
এ সময় একটি চিরকুটসহ লাশ উদ্ধার করেছে পূলিশ। তবে বামনশিকড় পবা উপজেলায় হলেও এলাকাটি পড়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মতিহার থানায়। এর আগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আলামত সংগ্রহ করে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মিনারুল দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে ছিলেন। পরিবারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি।
পুলিশ ধারণা করছে, চিরকুটটি মিনারুলের লেখা। চিরকুটে ঋণের দায়ে ও খাওয়ার অভাবে স্ত্রী ও সন্তাদের হত্যার পর আত্মহত্যার কথা লেখা আছে। চিরকুটের এক পাতায় লেখা আছে,আমি মিনারুল নিচের যে সব লেখা লেখবো। সব আমার নিজের কথা লিখে যাচ্ছি। কারণ, আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাবো। এই মৃত্যুর জন্য কারো কোনো দোষ নেই। আমি মিনারুল প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে (ছেলে) মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে (মেয়ে) মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি। চিরকুটে আরো লেখা আছে, আমাদের চারজনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলে ও তার স্ত্রী-সন্তান না দেখে এবং বাপের বড় ছেলে যেন জানাজায় না আসে। আমাদের চার জনকে কাফন দিয়ে ঢাকতে আমার বাবা যেন টাকা না দেয়। এটা আমার কসম।
চিরকুটের অপর পাতায় লেখা আছে,আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম, কারণ আমি একা যদি মরে যাই তাহলে, আমার স্ত্রী-সন্তানরা কার আশায় বেঁচে থাকবে, কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমারা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভাল হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্যে কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না। আমার বাবা আমার জন্য অনেক মানুষের কাছে ছোট হয়েছে, আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম।
আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ। পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান জানান,স্ত্রী এবং মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। ছেলেকেও শ্বাসরোধ করে হত্যার মতো মনে হচ্ছে। মিনারুল আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হচ্ছে। আরও তদন্তের পর আমরা প্রকৃত কারণটা জানতে পারব।