ঢাকা ০৮:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কারচুপি প্রতিহতের প্রস্তুতি নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ত্রিশালে জমকালো আয়োজনে ক্রিকেট ফাইনাল খেলায় চ্যাম্পিয়ন ‘জুনিয়র টাইগার’ দুর্গাপুরে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে আনন্দ র‌্যালি চাঁদাবাজদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কুড়িগ্রামে অটোরিকশা দেখতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো নারীর পাবনা-১ আসনে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাংবাদিক এম এ আজিজ বিস্ময়কর বিদ্যুৎ মানব আয়নাল, খালি হাতে বিদ্যুতের তারে সচলে অভ্যস্ত আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজের কর্ণধার: শিবির সভাপতি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা: নোয়াখালীতে ভুয়া র‍্যাব সদস্য গ্রেফতার উখিয়ায় ১০ ফুট লম্বা বার্মিজ অজগর উদ্ধার: আতঙ্কের পর নিরাপদে অবমুক্তির প্রস্তুতি

পবিত্র ঈদুল আজহা: ইবি শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০২:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
  • / ৪৬৮ বার পড়া হয়েছে

ইবি প্রতিনিধি

মুসলিম বিশ্বের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় পরিশুদ্ধ হওয়ার সুযোগ নিয়ে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে পবিত্র ঈদুল আজহা। উৎসর্গ, ত্যাগ, দান এবং মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটানো পবিত্র ঈদ সবার মাঝেই বয়ে আনে অনাবিল আনন্দের জোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে পবিত্র ঈদকে ঘিরে চলতে থাকে নানা জল্পনা-কল্পনা, উচ্ছাস আনন্দ।

“ত্যাগ, সচেতনতা ও সহমর্মিতার ঈদুল আজহা ”

শৈশবে কুরবানির ঈদ মানেই ছিল রঙিন জামা, গরুর সঙ্গে ছবি তোলা আর গরম ভাতের পাশে মাংসের সুগন্ধ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদের রূপ বদলেছে, বদলেছে আমাদের চিন্তাধারাও।

ঈদ শুধুমাত্র একটি আনন্দের দিন নয়—এটি আত্মত্যাগের, দায়িত্ববোধের এবং মানবিকতার এক অনুশীলনও বটে। ঈদের দিনে যখন আশপাশের মানুষদের মুখে হাসি ফোটে, তখনই কুরবানির পূর্ণতা আসে। ঈদের খাবার শুধু নিজের প্লেটে নয়, তা ভাগ করে নিতে হয় প্রতিবেশী এবং আত্মীয় স্বজনের সাথেও।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিষয় আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে—পরিবেশবান্ধব কুরবানি। আমরা অনেকেই জানি, ঈদের সময় পশুর বর্জ্য, অব্যবস্থাপনার কারণে শহরের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই পবিত্র উৎসব উদযাপনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার সচেতনতাও আমাদের দায়িত্বের অংশ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো এখন ঈদের অনুষঙ্গ হওয়া জরুরি।

আমার কাছে কুরবানির ঈদ মানে এক দিনে শেষ হওয়া কোনো উৎসব নয়, বরং এটি এক দীর্ঘ অনুশীলন— সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে এই ঈদ হয়ে উঠুক আমাদের মানবিক মূল্যবোধ ও আত্মিক বন্ধনের এক মহা উৎসব।

[মুমতাহিনা রিনি, শিক্ষার্থী,
ইংরেজি বিভাগ]

‘ভালোবাসা, অশ্রু ও আত্মত্যাগে কুরবানির ঈদ’

“মুসলিম উম্মাহের সবচেয়ে বড় উৎসব বলা হয়ে থাকে পবিত্র ঈদুল আজহাকে। আমার বয়স যখন ৭/৮ বছর এমন ছিলো তখন ঈদুল ফিতরের পর থেকেই গণনা শুরু করতাম কখন কুরবানীর ঈদ আসবে! কুরবানীর হাঁটে বাবার হাত ধরে সবগুলো হাঁট ঘুরতাম। পছন্দের বড় লাল গরুটা দেখে বাবাকে বায়না করতাম কিনে দিতে। তারপর পশু কেনা হলে ৩/৪ দিন যত্ন করতাম, খাওয়াতাম, গোসল করাতাম। অল্প সময়ে এত ভালোবাসা, মায়া জন্মে পশুটার প্রতি যে কুরবানীর সময় চোখ দিয়ে পানি চলে আসতো। কুরবানীর ঈদের প্রধান উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ত্যাগ স্বীকার করা। হযরত ইব্রাহিম (আ:) কুরবানী ত্যাগ স্বীকার স্বীকারের দৃষ্ঠান্ত রেখে গেছেন। কুরবানী একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই করতে হবে।”

[সাজ্জাদুজ জাওয়াদ আকন্দ, শিক্ষার্থী
আইন বিভাগ ]

‘স্বস্তির ছুটি, ঈদে ত্যাগের শিক্ষা’

“অবশেষে কাঙ্খিত ছুটি। নেই ৯ টায় ক্লাস করার তাড়া, নেই বাসে সিট ধরার অনিশ্চয়তা। ক্লাস পরীক্ষা, হঠাৎ সেমিস্টার পরীক্ষার পর স্বস্তির ছুটি। ঈদুল আজহায় বইকে সঙ্গী করে নাড়ীর টানে শিক্ষার্থীরা বাসায় ফেরে। ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ হলো ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হওয়ার পাশাপাশি সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, পরস্পর সহানুভূতি ও সহমর্মিতার শিক্ষা। সুবিধাবঞ্চিত, নিম্নবিত্ত ও সামর্থহীন মানুষের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটানো। মেলবন্ধন হয় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে। পুঁথিগত বিদ্যার বাহিরে গিয়ে বাস্তবসম্মত নৈতিক শিক্ষা, ত্যাগ-তিতীক্ষা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের পাশাপাশি নিজেদের দায়িত্ব সচেতনতা ও কর্তব্যপরায়ণতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জন ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের মাধ্যমে সুন্দর ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের ঈদুল আজহার অঙ্গীকার”

[শাহারিয়া রহমান শিমু, শিক্ষার্থী,
আইন বিভাগ]

‘ঈদ আসে অনুভব ঝরে, ত্যাগের বার্তায় জেগে ওঠা হৃদয়’

“ঈদুল ফিতরের পর ঈদুল আজহা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। ত্যাগ এবং সাম্যের আলো ছড়িয়ে দেয়ার আরেক নাম কুরবানির ঈদ। পশু জবেহের পর মাংস সমাজের সকল মানুষকে বিলিয়ে দেয়ার মাধ্যমে ধনী গরীবের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়, ফলে সমাজে বৈষম্য দূর হয়ে ভালোবাসার মানসিকতা তৈরি হয়। কুরবানি আত্মসংশোধনের শিক্ষা দেয়। ঈদুল আজহা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেয়। দেশ ও জাতি যে কঠিন সময় পার করছে মহান আল্লাহ যেন এই ত্যাগের ঈদে দ্রুত সুসময় দান করেন সেই প্রত্যাশা!
ঈদ আসে কিন্তু অনুভূতির জগতে ভাটা পড়েছে, মনে পড়ে সেই সোনালী অতীতের কথা, নতুন কাপড় কেনা হয়, সবাই একসাথে ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলির রেওয়াজটা আজও আছে। শুধু ঝরে গেছে অনুভূতির বাগানে সাজানো হাজারো গোলাপের সুরভিত পাপড়ি আর সাথে করে নিয়ে গেছে ঈদ আনন্দ, ভালোলাগা, উৎকন্ঠা, উচ্ছ্বাস আর অন্তর গহিনে গেঁথে থাকা চিনচিনে সুখটুক। তবুও চলছে চলুক অনবরত সময় সূচিত হোক স্মৃতির ফল্গুধারায়। এই ত্যাগের ঈদে যারা ঘর বাড়ি ফেলে রেখে ১৭৫ একরকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্র সংগঠন গুলোর প্রতি আহবান তাদের পাশে থেকে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া। হৃদয়ের গহীন থেকে সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।”

[সাহরিয়ার রশীদ নিলয়, শিক্ষার্থী,
লোক প্রশাসন বিভাগ]

‘ঈদে একাকীত্ব নয়, হোক সহানুভূতির স্পর্শ’

“ঈদুল আজহা বা কুরবানীর ঈদ মুসলিমদের জন্য আনন্দ ও মিলনের উৎসব। এটা শুধু একটা ধর্মীয় উৎসব নয় বরং এটা আনন্দ, ভালোবাসা আর একসাথে সময় কাটানোর এক দারুণ উপলক্ষ। এই ঈদ মানুষের মাঝে তৈরী করে আত্মত্যাগের মানসিকতা। প্রতিটি বয়সের মানুষের মতো শিক্ষার্থীরাও ঈদের আগমন নিয়ে থাকে বিশেষভাবে উচ্ছ্বসিত।
অনেক শিক্ষার্থী ঈদে গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেলেও চাকরি প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে কিছু শিক্ষার্থীর আর বাসায় ফেরা হয়না।ক্যাম্পাসের আশেপাশে যারা আছে তারা চাইলেই ঘরে ফেরা অপারগ শিক্ষার্থীদের একাকীত্ব দূর করতে পারে। আমাদের আশেপাশে পরিবার ছেড়ে একাকী ঈদ করা সকল ভাই, বোন, সহপাঠী ও সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে নিয়ে জুলাই পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের প্রথম ঈদুল আযহা হয়ে উঠুক আত্মত্যাগ, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার মহিমায় মহিমান্বিত।”

[কানিজ ফাতিমা অনন্যা, শিক্ষার্থী,
কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম]

 

‘পথ যত দূর হোক, ঈদ মানেই ফিরে যাওয়া ভালোবাসার কাছে’

“দীর্ঘ ঈদুল ফিতরের পর ত্যাগ আর আবেগের সংমিশ্রণে আসছে ইদুল আজহা। প্রত্যেকেই আমরা দিন গুনতে থাকি, কবে ছুটি হবে ভালোবাসার মানুষের কাছে ফিরব, আনন্দ ভাগ করব। সুখ যদিও ব্যক্তিগত তবু এই সুখ ব্যক্তিগত থেকে পারিবারিক, সামাজিক সুখে রুপান্তর করার অন্যরকম স্বাদ। ট্রেনের টিকিট না পেয়ে ঝুলে যাওয়া, হাজার হোক নিজ নীড়ে ফিরতে হবে যতই রোদ, ঝড়, বৃষ্টি হোক। তবুও আমাদের প্রচেষ্টা ভালোবাসার নীড়ে পৌঁছানোর, ভালোবাসার মানুষদের কাছে পাওয়ার। এই ঈদুল আজহা শুধু আর্থিক না, মানবিকও বটে। মনের হিংসা, বিদ্বেষ বাদ দিয়ে একে-অপরে ভালোবাসার ভ্রাতৃত্বে আবদ্ধ হয়ে গরু, ছাগল জবেহ করা এবং মাংস সবার মাঝে বিলিয়ে দেয়া হয়। নিজেদের পাশাপাশি, আত্মীয়-স্বজন ও গরীব দুস্থদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। কিঞ্চিত পরিমাণ আনন্দ ও পরিবারের সাথে অবিস্মরণীয় হয়ে ওঠে।”

[সাজ্জাদ হোসেন, শিক্ষার্থী,
মার্কেটিং বিভাগ]

নিউজটি শেয়ার করুন

পবিত্র ঈদুল আজহা: ইবি শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা

আপডেট সময় : ০২:০২:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

ইবি প্রতিনিধি

মুসলিম বিশ্বের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় পরিশুদ্ধ হওয়ার সুযোগ নিয়ে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে পবিত্র ঈদুল আজহা। উৎসর্গ, ত্যাগ, দান এবং মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটানো পবিত্র ঈদ সবার মাঝেই বয়ে আনে অনাবিল আনন্দের জোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে পবিত্র ঈদকে ঘিরে চলতে থাকে নানা জল্পনা-কল্পনা, উচ্ছাস আনন্দ।

“ত্যাগ, সচেতনতা ও সহমর্মিতার ঈদুল আজহা ”

শৈশবে কুরবানির ঈদ মানেই ছিল রঙিন জামা, গরুর সঙ্গে ছবি তোলা আর গরম ভাতের পাশে মাংসের সুগন্ধ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদের রূপ বদলেছে, বদলেছে আমাদের চিন্তাধারাও।

ঈদ শুধুমাত্র একটি আনন্দের দিন নয়—এটি আত্মত্যাগের, দায়িত্ববোধের এবং মানবিকতার এক অনুশীলনও বটে। ঈদের দিনে যখন আশপাশের মানুষদের মুখে হাসি ফোটে, তখনই কুরবানির পূর্ণতা আসে। ঈদের খাবার শুধু নিজের প্লেটে নয়, তা ভাগ করে নিতে হয় প্রতিবেশী এবং আত্মীয় স্বজনের সাথেও।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিষয় আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে—পরিবেশবান্ধব কুরবানি। আমরা অনেকেই জানি, ঈদের সময় পশুর বর্জ্য, অব্যবস্থাপনার কারণে শহরের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই পবিত্র উৎসব উদযাপনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার সচেতনতাও আমাদের দায়িত্বের অংশ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো এখন ঈদের অনুষঙ্গ হওয়া জরুরি।

আমার কাছে কুরবানির ঈদ মানে এক দিনে শেষ হওয়া কোনো উৎসব নয়, বরং এটি এক দীর্ঘ অনুশীলন— সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে এই ঈদ হয়ে উঠুক আমাদের মানবিক মূল্যবোধ ও আত্মিক বন্ধনের এক মহা উৎসব।

[মুমতাহিনা রিনি, শিক্ষার্থী,
ইংরেজি বিভাগ]

‘ভালোবাসা, অশ্রু ও আত্মত্যাগে কুরবানির ঈদ’

“মুসলিম উম্মাহের সবচেয়ে বড় উৎসব বলা হয়ে থাকে পবিত্র ঈদুল আজহাকে। আমার বয়স যখন ৭/৮ বছর এমন ছিলো তখন ঈদুল ফিতরের পর থেকেই গণনা শুরু করতাম কখন কুরবানীর ঈদ আসবে! কুরবানীর হাঁটে বাবার হাত ধরে সবগুলো হাঁট ঘুরতাম। পছন্দের বড় লাল গরুটা দেখে বাবাকে বায়না করতাম কিনে দিতে। তারপর পশু কেনা হলে ৩/৪ দিন যত্ন করতাম, খাওয়াতাম, গোসল করাতাম। অল্প সময়ে এত ভালোবাসা, মায়া জন্মে পশুটার প্রতি যে কুরবানীর সময় চোখ দিয়ে পানি চলে আসতো। কুরবানীর ঈদের প্রধান উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ত্যাগ স্বীকার করা। হযরত ইব্রাহিম (আ:) কুরবানী ত্যাগ স্বীকার স্বীকারের দৃষ্ঠান্ত রেখে গেছেন। কুরবানী একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই করতে হবে।”

[সাজ্জাদুজ জাওয়াদ আকন্দ, শিক্ষার্থী
আইন বিভাগ ]

‘স্বস্তির ছুটি, ঈদে ত্যাগের শিক্ষা’

“অবশেষে কাঙ্খিত ছুটি। নেই ৯ টায় ক্লাস করার তাড়া, নেই বাসে সিট ধরার অনিশ্চয়তা। ক্লাস পরীক্ষা, হঠাৎ সেমিস্টার পরীক্ষার পর স্বস্তির ছুটি। ঈদুল আজহায় বইকে সঙ্গী করে নাড়ীর টানে শিক্ষার্থীরা বাসায় ফেরে। ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ হলো ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হওয়ার পাশাপাশি সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, পরস্পর সহানুভূতি ও সহমর্মিতার শিক্ষা। সুবিধাবঞ্চিত, নিম্নবিত্ত ও সামর্থহীন মানুষের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটানো। মেলবন্ধন হয় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে। পুঁথিগত বিদ্যার বাহিরে গিয়ে বাস্তবসম্মত নৈতিক শিক্ষা, ত্যাগ-তিতীক্ষা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের পাশাপাশি নিজেদের দায়িত্ব সচেতনতা ও কর্তব্যপরায়ণতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জন ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের মাধ্যমে সুন্দর ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের ঈদুল আজহার অঙ্গীকার”

[শাহারিয়া রহমান শিমু, শিক্ষার্থী,
আইন বিভাগ]

‘ঈদ আসে অনুভব ঝরে, ত্যাগের বার্তায় জেগে ওঠা হৃদয়’

“ঈদুল ফিতরের পর ঈদুল আজহা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। ত্যাগ এবং সাম্যের আলো ছড়িয়ে দেয়ার আরেক নাম কুরবানির ঈদ। পশু জবেহের পর মাংস সমাজের সকল মানুষকে বিলিয়ে দেয়ার মাধ্যমে ধনী গরীবের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়, ফলে সমাজে বৈষম্য দূর হয়ে ভালোবাসার মানসিকতা তৈরি হয়। কুরবানি আত্মসংশোধনের শিক্ষা দেয়। ঈদুল আজহা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেয়। দেশ ও জাতি যে কঠিন সময় পার করছে মহান আল্লাহ যেন এই ত্যাগের ঈদে দ্রুত সুসময় দান করেন সেই প্রত্যাশা!
ঈদ আসে কিন্তু অনুভূতির জগতে ভাটা পড়েছে, মনে পড়ে সেই সোনালী অতীতের কথা, নতুন কাপড় কেনা হয়, সবাই একসাথে ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলির রেওয়াজটা আজও আছে। শুধু ঝরে গেছে অনুভূতির বাগানে সাজানো হাজারো গোলাপের সুরভিত পাপড়ি আর সাথে করে নিয়ে গেছে ঈদ আনন্দ, ভালোলাগা, উৎকন্ঠা, উচ্ছ্বাস আর অন্তর গহিনে গেঁথে থাকা চিনচিনে সুখটুক। তবুও চলছে চলুক অনবরত সময় সূচিত হোক স্মৃতির ফল্গুধারায়। এই ত্যাগের ঈদে যারা ঘর বাড়ি ফেলে রেখে ১৭৫ একরকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্র সংগঠন গুলোর প্রতি আহবান তাদের পাশে থেকে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া। হৃদয়ের গহীন থেকে সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।”

[সাহরিয়ার রশীদ নিলয়, শিক্ষার্থী,
লোক প্রশাসন বিভাগ]

‘ঈদে একাকীত্ব নয়, হোক সহানুভূতির স্পর্শ’

“ঈদুল আজহা বা কুরবানীর ঈদ মুসলিমদের জন্য আনন্দ ও মিলনের উৎসব। এটা শুধু একটা ধর্মীয় উৎসব নয় বরং এটা আনন্দ, ভালোবাসা আর একসাথে সময় কাটানোর এক দারুণ উপলক্ষ। এই ঈদ মানুষের মাঝে তৈরী করে আত্মত্যাগের মানসিকতা। প্রতিটি বয়সের মানুষের মতো শিক্ষার্থীরাও ঈদের আগমন নিয়ে থাকে বিশেষভাবে উচ্ছ্বসিত।
অনেক শিক্ষার্থী ঈদে গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেলেও চাকরি প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে কিছু শিক্ষার্থীর আর বাসায় ফেরা হয়না।ক্যাম্পাসের আশেপাশে যারা আছে তারা চাইলেই ঘরে ফেরা অপারগ শিক্ষার্থীদের একাকীত্ব দূর করতে পারে। আমাদের আশেপাশে পরিবার ছেড়ে একাকী ঈদ করা সকল ভাই, বোন, সহপাঠী ও সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে নিয়ে জুলাই পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের প্রথম ঈদুল আযহা হয়ে উঠুক আত্মত্যাগ, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার মহিমায় মহিমান্বিত।”

[কানিজ ফাতিমা অনন্যা, শিক্ষার্থী,
কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম]

 

‘পথ যত দূর হোক, ঈদ মানেই ফিরে যাওয়া ভালোবাসার কাছে’

“দীর্ঘ ঈদুল ফিতরের পর ত্যাগ আর আবেগের সংমিশ্রণে আসছে ইদুল আজহা। প্রত্যেকেই আমরা দিন গুনতে থাকি, কবে ছুটি হবে ভালোবাসার মানুষের কাছে ফিরব, আনন্দ ভাগ করব। সুখ যদিও ব্যক্তিগত তবু এই সুখ ব্যক্তিগত থেকে পারিবারিক, সামাজিক সুখে রুপান্তর করার অন্যরকম স্বাদ। ট্রেনের টিকিট না পেয়ে ঝুলে যাওয়া, হাজার হোক নিজ নীড়ে ফিরতে হবে যতই রোদ, ঝড়, বৃষ্টি হোক। তবুও আমাদের প্রচেষ্টা ভালোবাসার নীড়ে পৌঁছানোর, ভালোবাসার মানুষদের কাছে পাওয়ার। এই ঈদুল আজহা শুধু আর্থিক না, মানবিকও বটে। মনের হিংসা, বিদ্বেষ বাদ দিয়ে একে-অপরে ভালোবাসার ভ্রাতৃত্বে আবদ্ধ হয়ে গরু, ছাগল জবেহ করা এবং মাংস সবার মাঝে বিলিয়ে দেয়া হয়। নিজেদের পাশাপাশি, আত্মীয়-স্বজন ও গরীব দুস্থদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। কিঞ্চিত পরিমাণ আনন্দ ও পরিবারের সাথে অবিস্মরণীয় হয়ে ওঠে।”

[সাজ্জাদ হোসেন, শিক্ষার্থী,
মার্কেটিং বিভাগ]